• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ব্রিগেডে গীতা পাঠের রাজনৈতিক তরজা, রেকর্ড ভিড় মায়াপুরে

সেই বিতর্কের ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল নদিয়ার মায়াপুরে। ইসকন হেডকোয়ার্টারে চলল শান্ত, অনাড়ম্বর অথচ নজিরবিহীন ভিড়ের গীতা জয়ন্তী উৎসব।

নিজস্ব চিত্র

বিধানসভা ভোটের আগে পাঁচ লক্ষ মানুষের কণ্ঠে গীতা পাঠ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তুঙ্গে উত্তাপ। তৃণমূল, বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ—৭ ডিসেম্বর ব্রিগেডের মাঠে ‘গীতা পাঠ’-এর আড়ালে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণে নামছে। অনুষ্ঠান মঞ্চে সাদ্ধি রীতম্ভরা, আরএসএসপন্থী সন্ন্যাসী, গেরুয়া নেতা—সব মিলিয়ে রাজনৈতিক রংই দেখছেন বিরোধীরা।

কিন্তু সেই বিতর্কের ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল নদিয়ার মায়াপুরে। ইসকন হেডকোয়ার্টারে চলল শান্ত, অনাড়ম্বর অথচ নজিরবিহীন ভিড়ের গীতা জয়ন্তী উৎসব। ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর—ছ’দিনের এই উৎসবে ইসকন সূত্রের দাবি, কমপক্ষে তিন লক্ষ ভক্ত ও পর্যটক ঢল নেমেছে মায়াপুরে। শুধু ভারত নয়, বিদেশ থেকেও এসেছেন বহু প্রতিনিধি।

Advertisement

এই উৎসবে ১০ হাজার যুবক-যুবতী আগে থেকেই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তাঁরা এসেছে দেশের নানা প্রান্ত থেকে। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ হল ‘ওয়াক-ইন’ ভিড়—যা ইসকনের আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গীতা যজ্ঞ, কীর্তন-ভজন, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পা ফেলবার জায়গা ছিল না মায়াপুরে। ভক্তরা সুযোগ পেয়েছেন এখনও নির্মীয়মাণ টেম্পল অব দ্য ভেদিক প্ল্যানেটোরিয়াম (TOVP)-এর ভেতরটাও দেখার।

Advertisement

ইসকনের পিআরও রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলছেন, “গীতা জয়ন্তী এখন শুধু ভারতের উৎসব নয়। আমেরিকা, রাশিয়া, স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স—অনেক দেশ থেকেই প্রতিনিধি এসেছে। আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশন থাকলেও এবারের ভিড় আমাদের প্রত্যাশার বহু ঊর্ধ্বে।”

ব্রিগেডকে ঘিরে রাজনৈতিক আক্রমণ বাড়তেই মুখ খুলেছেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেলডাঙ্গার প্রধান স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ (কার্তিক মহারাজ)। তাঁর কথায়, “যাঁরা গীতা পাঠ নিয়ে রাজনৈতিক রং দেখছেন, তাঁদের গীতার দর্শন সম্পর্কে ধারণাই নেই। গীতা চিরকাল হিন্দুদের আত্মরক্ষার বাণী দিয়েছে—অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে শিখিয়েছে।”

শীত পড়তেই ছুটি কাটানোর তাগিদে সাধারণ পর্যটকদের ভিড়ও বেড়েছে ইসকনে। তাদের অনেকেই ভক্ত নন, তবুও গীতা জয়ন্তী ঘিরে তৈরি হওয়া পরিবেশ টেনেছে সকলকে।

এখন রাজ্যের নজর ফের ব্রিগেডমুখী। ৭ ডিসেম্বর পাঁচ লক্ষ মানুষের কণ্ঠে গীতা পাঠের কর্মসূচিতে আসছেন সন্ন্যাসী-প্রচারক ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী, যোগগুরু বাবা রামদেব, বৃন্দাবনের স্বামী জ্ঞানানন্দ-সহ আরও বহু প্রচারক। রাজনৈতিক তরজা কি আরও চড়াবে সেই আসর—সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement