• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

তিস্তাপাড়ে উদ্ধার হওয়া মর্টার সেল নিষ্ক্রিয় করল সেনা

স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক কাটল

নিজস্ব গ্রাফিক্স চিত্র

তিস্তার বুক থেকে উদ্ধার হওয়া পুরনো মর্টার সেলের বিস্ফোরণের শব্দে সোমবার কেঁপে উঠল জলপাইগুড়ি শহর-সংলগ্ন অঞ্চল। ভারতীয় সেনার জওয়ানরা নদীর মাঝ বরাবর সেই বিপজ্জনক সেল নিষ্ক্রিয় করতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। রবিবার তিস্তার ধারে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট চৌধুরী পাড়ার কাছে মর্টার সেলটি প্রথম নজরে আসে। চাষের কাজে ব্যস্ত এক কৃষক রকেটের মতো দেখতে ওই বস্তুটি খুঁজে পেয়ে তৎক্ষণাৎ খবর দেন কোতয়ালি থানায়।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। বন্ধ হয়ে যায় চাষাবাদ থেকে শুরু করে মানুষের যাতায়াত। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে রীতিমতো তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হলে সোমবার সকালে পৌঁছায় বম্ব ডিস্পোজাল স্কোয়াড। বিপজ্জনক মনে হওয়া সেলটিকে নদীর মাঝখানে নিয়ে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে নিস্ক্রিয় করা হয়। নিষ্ক্রিয়করণ সেই ভিডিও ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

এই ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের বিধ্বংসী বন্যার সময় তিস্তা নদী প্লাবিত হয়। যার জেরে সিকিমের পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত সেনা বেস ক্যাম্প ভেসে যাওয়ার পরই ওই মর্টার সেলটি নদীর স্রোতে ভেসে নিচে নেমে আসে। সেই ভয়াবহ বন্যায় বহু যুদ্ধাস্ত্র, সরঞ্জাম, এমনকি সেনা জওয়ানদের দেহও বহু দূর পর্যন্ত ভেসে আসতে দেখা যায়। পরে ত্রিশক্তি কর্পসের জওয়ানরা এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে বহু অস্ত্র উদ্ধার করেন।

Advertisement

তবে সেই সময় অনেক স্থানীয় বাসিন্দা স্রোতে ভেসে আসা সেনা–সামগ্রী ঘরে নিয়ে গিয়ে সিসা বা ধাতু বের করে বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন। তারই মর্মান্তিক উদাহরণ, ওই বছর ৫ অক্টোবর তিস্তাপাড়ের এক বাড়িতে সেনা-যন্ত্রাংশ হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতেই ঘটে যায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ঘটনায় একজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়, গুরুতর জখম হন আরও পাঁচজন।

সোমবারের মর্টার সেলটি উদ্ধার ও সেটি নিষ্ক্রিয়করণ পর স্থানীয়রা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রবিবার কৃষকরা নদীর ধারে গিয়ে বোমার মতো জিনিসটি দেখতে পেয়ে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। সোমবার সেনাবাহিনীর জওয়ানরা এসে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করতেই তাঁরা চিন্তামুক্ত হলেন।

তবে তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এখনও যুদ্ধাস্ত্র পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসন ও সেনাবাহিনী স্থানীয়দের সতর্ক করে জানিয়েছে, এ ধরনের কোনও সন্দেহজনক বস্তু দেখলেই যেন সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

Advertisement