• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য এক লক্ষ টন চাল কিনছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমীকরণেও এই চাল রপ্তানি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বাংলাদেশে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে যখন অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিচ্ছে, ঠিক তখনই পাকিস্তান সরকার ঢাকার বাজারে রপ্তানি করার উদ্দেশ্যে নিজেদের ঘরোয়া বাজার থেকেই বিপুল পরিমাণ চাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে বিশেষজ্ঞরা দুই দেশের সম্পর্কের নতুন উষ্ণতার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ পাকিস্তান’ ইতিমধ্যেই এক লক্ষ টন লম্বা দানার সাদা চাল কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে দরপত্র গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং আগামী শুক্রবারের মধ্যেই দরপত্র জমা দিতে হবে। ওই সংস্থার লক্ষ্য, প্যাকেটবন্দি চাল করাচি বন্দর থেকে জাহাজ যোগে বাংলাদেশে পাঠানো।

Advertisement

বাংলাদেশ খাদ্য পরিকল্পনা এবং পরিধারণ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে মোটা, মাঝারি এবং সরু দানার চালের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোটা চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫২.৪৩ টাকা, মাঝারি দানার চাল ৬২.৪৩ টাকা এবং সরু চালের দাম ৭৭.১০ টাকা। ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ-এর হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে দাম আরও অনেক বেশি।

Advertisement

দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি আরও কয়েক দফা চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশ থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া অর্থনৈতিকভাবে ঢাকার জন্য ইতিবাচক।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হাসিনার পদত্যাগের পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্যিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এরপর পাকিস্তান থেকে মোট প্রায় ৫০ হাজার টন বিভিন্ন চালের চালান এসেছে বাংলাদেশে।

এ বার প্রায় দ্বিগুণ চাল রপ্তানির উদ্যোগ নিয়ে ইসলামাবাদ বুঝিয়ে দিল, ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে তারা আগ্রহী। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমীকরণেও এই চাল রপ্তানি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

আগামী কয়েক সপ্তাহেই দরপত্র অনুযায়ী চাল ক্রয় সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের ঘরোয়া বাজারে এর প্রভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে, এমনটাই মনে করছে ব্যবসায়িক মহল।

Advertisement