জন সুরাজ পার্টির কর্মী খুনের অভিযোগে ভোটের ঠিক পাঁচ দিন আগে গ্রেপ্তার হন অনন্তকুমার সিং। ৭৫ বছর বয়সি দুলার চাঁদ যাদবকে খুনের অভিযোগ রয়েছে অনন্তকুমার এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। তবে ভোটবাক্সে তার কোনও প্রভাবই পড়ল না। রাজধানী পাটনা সংলগ্ন মোকামা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জিতলেন অনন্তকুমার সিং।
বিহারের রাজনীতিতে ‘বাহুবলী’ নেতা হিসেবে পরিচিত অনন্ত সিং। ২০০৫ সাল থেকে মোকামায় তাঁর রাজপাট চলছে। একাধিক দল বদলেও কখনও ভোটে হারেননি। ‘ছোটে সরকার’ নামেও তিনি পরিচিত। মোকামায় এ বার তাঁর বিরুদ্ধে আরজেডি-র টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন বীণা দেবী।
Advertisement
তিনি অনন্তের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুরজভান সিংহের স্ত্রী। সুরজভান নিজেও মোকামায় ‘বাহুবলী’। সুরজভানের স্ত্রী অনন্তের কাছে হারলেন প্রায় ২৮ হাজার ২০৬ ভোটে। এ ছাড়া, প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজ পার্টির হয়ে মোকামায় দাঁড়িয়েছিলেন প্রিয়দর্শী পীযূষ। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ হাজার ভোট পেয়ে ওই আসনে তিনি তৃতীয়।
Advertisement
প্রিয়দর্শীর হয়ে প্রচারে গিয়ে খুন হন ৭৫ বছরের দুলার চাঁদ যাদব। এই খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন জেডিইউ প্রার্থী অনন্ত কুমার সিং। ভোটের মুখে প্রার্থীর গ্রেপ্তারিতে শাসকদল কিছুটা অস্বস্তিতে পড়বে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ঠিক তার উল্টো ঘটনা ঘটল।
আরজেডি বা পিকের দল অনন্তর সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে। প্রতিবারের মতো এবারও রেকর্ড ভোটে জিতলেন অনন্ত। শুক্রবার মোকামায় তাঁর বাড়ির সামনে তাঁবু খাটিয়ে লোকজনকে ভরপেট খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। সমর্থকদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণও করা হয়। মোকামায় পোস্টারে লেখা হয়েছিল, ‘জেল কা ফটক টুটেগা, হামারা শের ছুটেগা’!
২০০৫ সালে অনন্ত কুমার সিং মোকামায় জেডিইউ প্রার্থী হিসেবে প্রথম ভোট জিতেছিলেন। ২০১০ সালেও ফের জেতেন। ২০১৫ সালে লালু প্রসাদ যাদব এবং নীতীশ কুমার জোট বাঁধেন। সেই সময় জেডিইউ ছাড়েন অনন্ত। নির্দল হিসেবে লড়ে জেডিইউ প্রার্থীকে হারান। ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে আরজেডি-তে যোগ দেন। সেই সময় নীতীশ-লালুর মধ্যে আর কোনও জোট ছিল না। আরজেডি প্রার্থী হিসেবে জেতেন অনন্ত।
এরপর ২০২২ সালে অস্ত্র সংক্রান্ত একটি মামলায় তাঁর নাম জড়ায়। এরফলে বিধানসভার সদস্যপদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন অনন্ত। উপনির্বাচনে তাঁর আসনে লড়েন তাঁর স্ত্রী নীলম দেবী। জিতে বিধায়ক হন তিনি। এ বছর আরজেডি ছেড়ে জেডিইউ-তে ফেরেন অনন্ত। ভোটের আগে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর মনে করা হয়েছিল ভোটের সমীকরণ বদলাতে পারে। কিন্তু দেখা গেল ভোটের ফলাফলে সে রকম কোনও প্রভাব পড়েনি।
Advertisement



