• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ইসলামাবাদ আদালতে রক্তক্ষয়ী হামলা, দেশজুড়ে আইনজীবীদের বয়কট

পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারে বেহাল

ছবি: এনএনআই

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের আদালত চত্বরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যু ও আতঙ্কের পর এবার দেশজুড়ে আইনজীবীরা আদালত বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভয়াবহ অবনতি প্রকাশ্যে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার ইসলামাবাদ জেলা আদালতের ভেতরে হঠাৎ প্রবেশ করে সশস্ত্র জঙ্গিদের এক দল নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৩০ জনের বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিচারক, আইনজীবী ও সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।

Advertisement

হামলার পরই আইনজীবী সংগঠনগুলি জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবাদের ডাক দেয়। পাকিস্তান বার কাউন্সিল জানিয়েছে, ‘যে দেশে আদালতই নিরাপদ নয়, সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’ সংগঠনটির আহ্বানে সারাদেশের আদালতে আইনজীবীরা কাজ বয়কট করেছেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, হ্যান্ড গ্রেনেড এবং বিস্ফোরকের বিভিন্ন অংশ। হামলাকারীদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। তবে গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন, এই আক্রমণের পেছনে সক্রিয় ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)–এর হাত থাকতে পারে।

হামলার পর ইসলামাবাদসহ পাঞ্জাব ও খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আদালত, সরকারি দপ্তর ও সেনা শিবিরগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতিই এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মন্তব্য করেছেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন এমন হামলাই তার প্রকৃত প্রতিচ্ছবি।’

পাকিস্তানের ইতিহাসে আদালতের ভিতরে এমন ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী হামলা বিরল। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা শুধু দেশের আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতাই নয়, বরং বিচারব্যবস্থার উপর আঘাত।

Advertisement