• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

শিল্পীর নবজন্ম

মজুরবাহিনী যে শত্রুর বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ চালাইতেছে, বিবেকের নির্দেশে আদেশ অমান্য করাও সেই শত্রুর দুর্গপ্রাকারেই আঘাত করা হয়।

ফাইল চিত্র

রম্যাঁ রলাঁ

পূর্ব প্রকাশিতর পর

Advertisement

ইউরোপের অনেকেই আমার পক্ষে আসিতেছেন। গত কয়েক বৎসরের ঘটনায় ইউরোপের বহু সুস্থবিবেকই গভীরভাবে আলোড়িত; আত্মবিক্রীত সংবাদপত্রগুলিতে অবশ্য ইহার কোনো পরিচয় পাওয়া যায় না।

Advertisement

আমার মধ্যে এক নূতন
ইউরোপের অভ্যুদয়কে আপনারা প্রত্যক্ষ করুন। এই ইউরোপ আপনাদের দিকে আগাইয়া যাইতেছে।’’
৩৬। আমি প্রায়ই, বীরোচিত শক্তিমান অবাধ্যতার (disobedience) সমর্থন ও প্রচার করিয়াছি। আমি দেখাইয়াছি কেবলমাত্র ভারতবর্ষের পক্ষেই ইহা ফলপ্রদ নহে এমন কি ইউরোপে ইহার একটি গৌরবময় অতীত রহিয়াছে। (১৯২০ সালের ১৪ই জুলাই ‘নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ’ সম্পর্কে চিঠি।) কিন্তু এই মহান অস্বীকৃতির পথ যাহারা গ্রহণ করেন তাহারা ত্যাগ ও দুঃখবরণের দুরূহ কর্তব্যও সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ করেন।

আমি আইনস্টাইন ও ‘War Resisters International’ হইতে নিজেকে বিশ্লিষ্ট করিলাম। ‘War Resisters’ International’ তখন আইনস্টাইনের ঘোষণাবাণীটি গ্রহণ করিয়াছে। কোনোরূপ বিপদের ঝুঁকি না লইয়া কেবলমাত্র সহজ ব্যক্তিগত অস্বীকৃতির দ্বারাই পৃথিবীতে যুদ্ধের বিলোপ ঘটান চলিতে পারে, তাহাদের এই বিপজ্জনক শিশুসুলভ আশাবাদ যে, কত বড় বিভ্রান্তি তাহা আমি তাহাদের জানাইয়া দিই। (১৯৩১ সালের ফেব্রুয়ারী ‘War Resisters’ International’-এর সেক্রেটারী রানহ্যাম্ ব্রাউনের সহিত পত্র বিনিময়)

৩৭। ‘International Pacifist’ নামে এউজেন রেলজিস একখানা বই লিখিয়াছেন। ১৯২৯ সালে ফ্রান্সে আঁদ্রে দেলপেশ কর্তৃক উহা প্রকাশিত হয়। ১৯২৮ সালের জুলাই মাসে অস্ট্রিয়ার মুনৎসেনবের্গ-এ অনুষ্ঠিত লা’তেরনাসিয়নাল দে রেজিস্তাঁ আলাগের-এর এক সম্মেলনে তিনি যাহা বলেন এই পুস্তকে তাহাই বিশদভাবে বিবৃত করেন। এই উপলক্ষ্যে প্রেরিত আমার একখানি চিঠি ও একটি বাণী তিনি তাহার পুস্তকে প্রকাশ করেন। কিন্তু ১৯৩০ সালে তিনি যে ইউরোপীয় তদন্ত পরিচালনা করেন আমি তাহার একখানি দীর্ঘ জবাব দিই; সেটি তিনি প্রকাশ করিয়াছেন কিনা জানি না। সমাজসংগ্রাম ও শ্রমজীবীশ্রেণীকে ছোট করিয়া দেখিতে অভ্যস্ত মসীকৌলিন্যাভিমানী বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর বাস্তবসংস্পর্শহীন শান্তিবাদের নিকট এই জবাবের গুরুত্ব অন্যপ্রকারের অস্বস্তিকরও।

৩৮। ১৯৩২ সালে র আগস্ট মাসে আমস্টার্ডম কংগ্রেসে ৩০,০০০ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হইতে ২,০২০ প্রতিনিধি যোগদান করেন। ঐ ৩০,০০০ প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা ৩০,০০০,০০০। ১৯৩২ সালের ১৫ই অক্টোবর ইউরোপ পত্রিকায় আমি ঐ সম্মেল নের একটি রিপোর্ট দিই।

২৭শে আগস্ট প্রথম অধিবেশনে পঠিত আমার বাণীর মধ্যে আমি বলি: ‘‘আমাদের প্রত্যেকের, প্রত্যেক দলের, নিজেদের অস্ত্র, নিজেদের কৌশল রহিয়াছে। সকল আন্তরিক ত্যাগ ও আকাঙ্ক্ষাকে আসুন আমরা একত্রিত করি। লক্ষ্য যদি এক হয় তবে সাধারণ কর্মক্ষেত্রের মধ্যেই বহু স্বতন্ত্র ব্যক্তিগত কাজ চলিতে পারে।

মজুরবাহিনী যে শত্রুর বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ চালাইতেছে, বিবেকের নির্দেশে আদেশ অমান্য করাও সেই শত্রুর দুর্গপ্রাকারেই আঘাত করা হয়।

(ক্রমশ)

Advertisement