• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

আফগানিস্তান ভারতের হাতের পুতুল তোপ পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর, ৫০ গুণ প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি

তুরস্কে তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যেতেই ভারতকে দুষল পাকিস্তান

তুরস্কে তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যেতেই ভারতকে দুষল পাকিস্তান। যুদ্ধে আফগানিস্তানকে মদত দিচ্ছে ভারত, এই অভিযোগ তুলে সরব হল শাহবাজ শরিফের দেশ। ভারতের হাতের পুতুল আফগানিস্তান, অভিযোগ পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের। ইসলামাবাদের উপর কোনও রকম হামলা হলে, তার ৫০ গুণ প্রত্যাঘাত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন খোয়াজা আসিফ।

সম্প্রতি তুরস্কে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে শান্তি ফেরানোর উদ্দেশে দ্বিতীয় দফার বৈঠক হয়। এই বৈঠকে মধ্যস্থতা করে তুরস্ক ও কাতার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনার পরও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। খোয়াজা আসিফের দাবি, আফগানিস্তান শেষ মুহূর্তে আলোচনায় নিজেদের অবস্থান বদল করে। আর এই সিদ্ধান্তের পিছনে ভারতের একশো শতাংশ প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘কাবুল দিল্লির মদতে পুতুলনাচ নাচছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়তে ভারত আফগানিস্তানকে ব্যবহার করছে।‘

Advertisement

আফগানিস্তানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় যুদ্ধ করছে, দাবি পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজ আসিফের। আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসিফ বলেন,‘যদি ওরা ইসলামাবাদের দিকে চোখ তুলে তাকায়, তা হলে চোখ উপড়ে নেওয়া হবে।’  হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, ‘ভারত ও আফগানিস্তানের যৌথভাবে চালানো প্রভাব বা হামলার রাজনীতি পাকিস্তান আর সহ্য করবে না।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন বলেন, ‘যখনই আলোচনার মাধ্যমে আমরা চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছি, তখনই প্রতিনিধিরা কাবুলকে রিপোর্ট করছে। হস্তক্ষেপ করে শেষ পর্যন্ত চুক্তি বাতিল করা হয়।‘ এরপরই পাক মন্ত্রী বলেন, ‘কোনও হামলা হলে তার ৫০ গুণ ফেরত দেবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে পাকিস্তানে সন্ত্রাসের জন্য কাবুল দায়ী। যদি আলোচনায় কোনও ফল না মেলে তবে অবশ্যই আফগানিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ হবে।‘

পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবানের একটি শাখা পাকিস্তানি তালিবান। আফগানিস্তান এবং ভারতের মদতে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে বলে দাবি ইসলামাবাদের। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত এবং আফগানিস্তান। চলতি মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে পাকিস্তানি সেনার যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তার নেপথ্যেও ছিল এই গোষ্ঠী।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলা এবং তার পরবর্তী সময়ে তালিবান সরকারের জবাব দুই দেশের সীমান্তকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে। গত ১৮ অক্টোবর কাতারের রাজধানী দোহাতে প্রথম দফার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। ওই বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন আফগানিস্তান ও পাকিস্তান দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলবি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ ও খোয়াজা আসিফ।

তবে দীর্ঘ বৈঠকের পরেও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারেনি কাবুল এবং ইসলামাবাদ। সীমান্ত এলাকায় শান্তিপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশে গত শনিবার থেকে তুরস্কে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। ওই বৈঠকে মধ্যস্থতা করে তুরস্ক এবং কাতার। সেই বৈঠকেও কোনও রফাসূত্র মেলেনি। আর এই বৈঠক ভণ্ডুল যাওয়ার জন্য ভারতকে দায়ী করেছে পাকিস্তান। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই মন্তব্যে ইললামাবাদ এবং সাউথ ব্লকের সম্পর্ক আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্য নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

 

Advertisement