সব্যসাচী চট্টরাজ, পুরুলিয়া— পুরুলিয়া জেলাজুড়ে ছট পুজো উপলক্ষ্যে শুরু হয়েছে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশ। দীপাবলির পর শুক্লা চতুর্থী থেকে শুরু হওয়া চারদিনের ব্রত পালন করে ব্রতীরা ছট মায়ের পুজো করে থাকেন। জানা যায়, এই চারদিন কঠোর নিয়ম মেনে সূর্য দেবতার আরাধনা করা হয়। সোমবার প্রথম অর্ঘ অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় অর্ঘ।
পুরুলিয়ার বিভিন্ন নদী, জলাশয় ও ঘাট ছট পুজোর আয়োজন ঘিরে উৎসবের রূপ নেয়। শহরের সাহেব বাঁধ, আদ্রার সাহেব বাঁধ, আদ্রার সূর্য সরোবর, ঝালদা মহকুমার সুবর্ণরেখা এবং নিতুড়িয়ার দামোদর নদসহ জেলার অন্যান্য নদী ও জলাশয় পুজোর জন্য সেজে ওঠে। জেলার মানুষ, বাঙালি-অবাঙালি, হিন্দি ভাষী— সকলেই মিলেমিশে এই পুজোর আয়োজন ও আনন্দে অংশ নেন।
Advertisement
জেলার একমাত্র খনি অঞ্চল নিতুড়িয়ায় এই ছট উৎসব দীর্ঘকাল ধরে হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি এটি এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। নিতুড়িয়া, সালতোড় ও পারবেলিয়া পঞ্চায়েতের পুজো কমিটি ছট উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকাটিকে সুন্দর ও নিরাপদ করে তুলতে এক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নেন। পুলিশ প্রশাসনও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় বিশেষ নজর রাখে। এলাকায় সিসিটিভি ও ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি করা হয়, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
Advertisement
এবছর সোমবার অস্তগামী সূর্যকে পুজো করে প্রথম অর্ঘ দেওয়া হবে। পরদিন ভোরে উদীয়মান সূর্যকে পুজো করে দ্বিতীয় অর্ঘ অর্পণ করা হবে। ব্রতীরা চারদিন পুরোপুরি নিরামিষ এবং কঠোর নিয়ম মেনে ব্রত পালন করেন। অনেক ব্রতী বাড়ি থেকে নদীঘাট পর্যন্ত দণ্ডী কেটে আসেন। নিতুড়িয়া থানা এলাকার নেতাজি সুভাষ সেতুর নীচে দামোদর নদে তিল ধারনের স্থান থাকে না। পুজো উপলক্ষ্যে দামোদর নদ প্রাঙ্গণে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের ভিড় হয়।
পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দর্শনার্থী ও ব্রতীদের ভিড় সামলানো পুলিশ প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ছট পুজো মূলত হিন্দিভাষীদের বড় উৎসব। ভিড়, আনন্দ ও উদ্দীপনায় মনে হয়, নিতুড়িয়া যেন এক টুকরো বিহার হয়ে উঠেছে।
Advertisement



