আলিপুরের একটি বাড়ির আলমারি থেকে বছর দশেকের এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মৃতা সুরঞ্জনা সিংহ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুন মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসেছে মর্টার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে।
সোমবার রাতে নিজের ঘরের আলমারি থেকে নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন তার সৎমা পূজা রায়। তিনি জানান, বাজার থেকে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজ করতে গিয়ে আলমারি খুলতেই দেখেন দেহ ঝুলছে। খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সুরঞ্জনার দেহটি আলমারির ভিতরে একটি হ্যাঙ্গার থেকে আংশিকভাবে ঝুলছিল, গলায় ওড়নার ফাঁস ছিল। তদন্তকারীরা আত্মহত্যা না খুন— সে দিকেই এখন নজর দিচ্ছেন।
Advertisement
সুরঞ্জনার বাবা ভোলা সিংহ পেশায় একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী। মৃতার মা ববিতা রায়ের মৃত্যুর পর তিনি বিয়ে করেন তাঁরই বোন, অর্থাৎ সুরঞ্জনার সৎমা পূজা রায়কে, যিনি কলকাতা পুলিশের কর্মী। প্রতিবেশীদের দাবি, ভোলা ও পূজা নিয়মিত সুরঞ্জনাকে মারধর করতেন। অনেক সময় মেয়েটির কান্নার শব্দ শুনতেন স্থানীয়রা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ভোলা নিজের বৃদ্ধা মাকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন।
Advertisement
মঙ্গলবার সকালে পুলিশ যখন দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে, তখন ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সৎমা পূজা কেঁদে বলেন, “আমার মেয়েকে আমি খুন করিনি।” ভোলা বলেন, “আমার মেয়ে নেই, আমিও বাঁচতে চাই না।” তবে প্রতিবেশীদের দাবি, এ সব ‘সহানুভূতি কুড়োনোর নাটক’।
এ ঘটনার পর বিদ্যাসাগর কলোনিতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের একাংশ সই সংগ্রহ শুরু করেছেন ওই পরিবারকে এলাকা ছাড়ার দাবিতে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার তত্ত্বই মিলছে। তবে মাত্র দশ বছরের একটি মেয়ে কেন এমন চরম সিদ্ধান্ত নিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Advertisement



