চিনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশের ৯ জন শীর্ষ জেনারেলকে বরখাস্ত করেছে। একই সঙ্গে তাঁদের সামরিক বাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মারাত্মক আর্থিক অপরাধের কারণে ওই ৯ জন সন্দেহের তালিকায় ছিলেন। তাঁদের বিরদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত চলছিল। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরই তাঁদের চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আরও তদন্ত চলছে। এরপর বরখাস্ত সেনাকর্তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বরখাস্ত হওয়া সেনাকর্তাদের অধিকাংশই তিন তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। এমনকি তাঁরা পার্টির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটিরও অংশ। যে ৯ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন হি ওয়েইডং, সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান, মিয়াও হুয়া, সিএমসি-র রাজনৈতিক বিভাগের অধিকর্তা, হে হংজুন, সিএমসি-র রাজনৈতিক বিভাগের এক্সিকিউটিভ ডেপুটি ডিরেক্টর, লিন জিয়াংইয়াং, ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডার, কিন শুতং, সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার, ইউয়ান হুয়াজি, নৌবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার, ওয়াং হৌবিন, রকেট ফোর্সেস কমান্ডার, ওয়াং চুনিং, আর্মড্ পুলিশ ফোর্স কমান্ডার।
এঁদের মধ্যে হি ওয়েইডং চিনের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর পরই তিনি সিএমসি-র চেয়ারম্যান। গত মার্চ মাসের পর থেকেই জনসমক্ষে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। সেই নিয়ে জল্পনাও বাড়ছিল। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ ফোরাম পলিটব্যুরোতেও ছিলেন। পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে তিনিই প্রথম এই ধরণের তদন্তের আওতায় এলেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই ৯ র্কমকর্তা দলের শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছেন এবং তাঁরা তাঁদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে মারাত্মক অপরাধের দায়ে সন্দেহভাজন।’
প্রসঙ্গত, সিএমসি এই ধরণের অভিযানের ইঙ্গিত আগে থেকেই দিয়ে আসছিল। জুলাই মাসে সামরিক বাহিনীতে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। সামরিক বাহিনীতে শুদ্ধিকরণ অভিযানও চালানো হয়েছিল। দুর্নীতিপরায়ণ এবং অবিশ্বস্ত ক্যাডারদের বাদ দেওয়ার অভিযান চালানো হয় যাতে সংগঠন পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল এবং কার্যকর হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত শুদ্ধিকরণের অংশ হিসেবেও করা হয়ে থাকতে পারে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের আগেই এই জেনারেলদের বরখাস্তের ঘটনা ঘটেছে। আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হবে দলের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন। সেখানে কারা কারা অংশ নেবেন সেটাই এখন দেখার।