শোভনলাল চক্রবর্তী
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে লাগাতার ইজ়রায়েলি আক্রমণে গাজ়ায় বর্তমানে যে বিপুল মাপের অসহনীয় মানবাধিকার সঙ্কট তৈরি হয়েছে— তাতে কেবল ভারত কেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ দৃশ্যমান। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নানা দেশের সাধারণ মানুষ— বিশেষত ছাত্রছাত্রীরা— প্রতিবাদে মুখর। এঁরা সবাই বিপ্লবী বা বামপন্থী নন, এমনকি তাঁরা নিজেদের রাষ্ট্রের বিরোধিতা করার সুযোগ বা অভিসন্ধিও খুঁজছেন না। এমনকি কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হয়েও তাঁরা শুধু মানবাধিকার ও মানবকল্যাণে বিশ্বাস করেই পথে নেমে এসেছেন। সম্প্রতি তেল আভিভেও রাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধতায় পথে নেমেছেন শুভবোধসম্পন্ন ইজ়রায়েলিরা। বিলম্বে হলেও এই বিশ্বজোড়া প্রতিরোধ মানবিকতার বিশ্বাস ফিরিয়ে আনে।
Advertisement
তবে গাজ়ার বাস্তব স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, বিশ শতকের জার্মানির থেকে একুশ শতকের প্যালেস্টাইন বেশি পিছিয়ে নেই। জেনোসাইডের ঘোষিত লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে ইজ়রায়েল। অনাহারে সেখানকার শিশুরা প্রতি দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে, অথচ সে হিসাব যুদ্ধনিহতের সরকারি তালিকায় যোগ হচ্ছে না। এত দিন ত্রাণসাহায্য বন্ধ ছিল, ত্রাণবাহকরাও নিরাপদ ছিলেন না, এখন আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ শুরু হতে বিমানের অপেক্ষায় ঊর্ধ্বমুখে দুর্বল জীর্ণ মৃতপ্রায় নারীপুরুষ। একবিংশ শতকের বিশ্ব এমন পরিকল্পিত গণহত্যার দৃশ্য আর দেখেনি বললে ভুল হবে না। আরও অভাবনীয়, এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনকারীদের সহায়ক হল পশ্চিম বিশ্বের তাবৎ উন্নত ধনী ও বলশালী দেশ। সভ্যতার এই চরম সঙ্কটে ভারতের মতো দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে সমাধান বা সমস্যা নিরসনের প্রয়াস করা অত্যন্ত দুরূহ। অন্তত উদ্বেগনিষিক্ত প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অধিকারটি হরণ করা না হোক!ধন্য সেই ‘গণতন্ত্র’ যেখানে প্রতিবাদ আন্দোলন করতে গেলে নিদান আসে, নাগরিক কোন বিষয়ে মাথা ঘামাতে পারেন, আর কোন বিষয়ে পারেন না। শোনা যায়, রাজনৈতিক দলগুলি কোন ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে পারে, কোন ঘটনাকে পারে না। কিছুদিন আগে মহারাষ্ট্রে তেমনই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হল। গাজ়ার মানবসৃষ্ট তীব্র সঙ্কট নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট) প্রতিরোধ আন্দোলনে অবতীর্ণ হলে তা নিয়ে মামলা হয়, এবং তা আদালতে পৌঁছনোর পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ থেকে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বার্তা আসে— দেশের মধ্যেকার এত সমস্যা থাকতে তাঁরা কোন কারণে খামোকা বিদেশের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন! বিচারপতিরা বলেন, প্রতিবাদীদের দৃষ্টি সঙ্কীর্ণ, এবং তাঁরা যথেষ্ট দেশপ্রেমী নন। না বলে উপায় নেই যে এই সুতীব্র ভর্ৎসনা এক বিরাট অংশের মুক্তবুদ্ধির দেশবাসীকে অবাক করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কে কী নিয়ে ভাবতে পারেন বা পারেন না— সে কথা কেউ কাউকে নির্দেশ দিতে পারেন না, তা সোজাসুজি গণতান্ত্রিক ভারতের নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। আর আদালতের চত্বর থেকে এই বাণী কী ভাবে ভেসে এল, তা ভাবলে বিপন্ন বোধ করতে হয়। ভারতের মতো একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র ও গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্রের এই হাল কিছু দিন আগেও ভাবনাতীত ছিল। অবশ্য গত এক দশকে ভারত অতি দ্রুত এমন একটি অবতলে এসে দাঁড়িয়েছে, যাতে ‘ভাবনা’র অক্ষ-দ্রাঘিমাও পুরোদস্তুর পাল্টেছে।
Advertisement
বাস্তবিক, এও লক্ষণীয় যে এমন সংবাদ আজ সর্বভারতীয় জনমানসে এসে পৌঁছনোর পর ক্ষীণ তরঙ্গ তুলেই কেমন বিস্তীর্ণ মহাকালে বিলীন হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যম জুড়ে কেবল ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়ে চলে নাগরিক অধিকারের সীমা দর্শানোর তর্জনীশাসন, কাকে বলে দেশপ্রেম সেই মর্মে অন্ধতা ও সঙ্কীর্ণতার পাখিপড়া অনুশীলন। ‘যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা’: জীবনানন্দের সেই অলঙ্কারশাণিত পঙ্ক্তিই প্রত্যহ আরও বেশি করে নিরলঙ্কার সত্য হয়ে উঠেছে।ক্ষুধাকে যে কতদূর পর্যন্ত যুদ্ধে কাজে লাগানো যায়, পৃথিবী তা দেখছে— বিশেষত গাজ়ার আয়নায়। ক্ষুধার প্রয়োগক্ষেত্রটি হল দুর্ভিক্ষ, গাজ়ায় সেই দুর্ভিক্ষ তৈরি করা হয়েছে অঙ্কের হিসাবে। হিসাবটি সহজ: প্যালেস্টাইনিরা যাতে গাজ়া ছাড়তে না পারেন, প্রথমেই তা নিশ্চিত করা। যুদ্ধ হলেই দলে দলে মানুষ দেশ ছাড়ে, এখানে সে পথ বন্ধ। স্বদেশে থাকতে হলে খেয়ে বাঁচতে হবে, কিন্তু স্থল ও আকাশ-যুদ্ধে ‘দেশ’ এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত, কৃষিজমি নিশ্চিহ্ন। মাটি যখন বন্ধ্যা, তখন খাবারের সন্ধানে জলের কাছে যাওয়া যায়। তিন দিক স্থলবেষ্টিত গাজ়ার খোলা দিকটিতে যে ভূমধ্যসাগর, সেখানে মাছ ধরতে গিয়ে গাজ়াবাসী দেখছেন সেও নিষিদ্ধ, ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস সাঁতারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সমুদ্রের ধারেকাছে প্যালেস্টাইনিদের দেখলেই গুলিবৃষ্টি। প্রতিবেশী মিশরের মানুষ বোতলের মধ্যে শুকনো খাবার, গুঁড়ো দুধ পুরে বোতল জলে ভাসিয়ে দিচ্ছেন, যদি তা পৌঁছয় গাজ়ার তটে— করুণ ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সংবাদমাধ্যমে। গাজ়াবাসীর খাবারের প্রতিটি ক্যালোরি এখন বাইরে থেকে এসে পৌঁছনোর উপর নির্ভরশীল। সেও অতিনিয়ন্ত্রিত: রাষ্ট্রপুঞ্জ, মানবাধিকার সংগঠন ও অন্য দেশগুলি থেকে আসা খাবার ও ওষুধ গাজ়ায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে নামমাত্র। ইজ়রায়েল জানে গাজ়ার বাসিন্দাদের ক্ষুধা নিবৃত্তিতে ঠিক কতটুকু খাবার দরকার, কতটুকু হাতে দিলে মানুষগুলো খিদে আর অসুখে ভুগে কঙ্কালসার হয়ে যাবে কিন্তু বেঁচেও থাকবে, একেবারে মরে যাবে না— ক্ষুধাকেন্দ্রিক এই ‘গবেষণা’ তারা করে আসছে আজ নয়, গত কয়েক দশক ধরে। যে ইজ়রায়েলি সংস্থাটি গাজ়ায় খাদ্য পরিবহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা হিসাব করে দেখেছে যে প্যালেস্টাইনিদের মাথাপিছু রোজ গড়ে ২২৭৯ ক্যালোরি দরকার, ১.৮ কেজি খাবারের মধ্য দিয়ে যা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু যুদ্ধের থাবায় তার অর্ধাংশও অমিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেষ এমন ক্ষুধাবোধের তুলনা হতে পারে একমাত্র নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদি ও অন্য বন্দিদের খিদের সঙ্গে। অন্য ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে কি না জানা নেই, ক্ষুধার ইতিহাসধারাটি যুগ ও যুদ্ধ-নির্বিশেষে বহতা আজও।কোন বোধটি মানুষকে সবচেয়ে বেশি তাড়না করে? এ প্রশ্নের উত্তর যুগে যুগে খুঁজে ফিরেছেন নানান মানুষ— বিজ্ঞানী, দার্শনিক, লেখক, শিল্পী, সমাজকর্মী। প্রত্যেকের এষণার পরিধিটি আলাদা; উপকরণ, মাপকাঠিও। কিন্তু যে জায়গাটিতে সবাই এসে মিলেছেন কখনও না কখনও, তা হল ক্ষুধা। মানুষের খিদে পায়: উচ্চ-নীচ, ধনী-নির্ধন, পণ্ডিত-মূর্খ সব মানুষেরই; ক্ষুধাবোধই প্রকৃত সমভাবের চিহ্ন। তবে সমাজ-মনস্তাত্ত্বিকরা বলেন, বিশ্বের অনেক মানুষই ক্ষুধার বোধ কী তা বুঝতে পারেন না, কারণ চেতনে-অবচেতনে তাঁরা জানেন তাঁদের কাছে খাবার আছে, বা তা জোগাড়ের সামর্থ্য আছে। যাঁদের তা নেই, তাঁরাই জানেন ক্ষুধার বোধ, তার তাড়না। দার্শনিকেরা তাই বলেন, সভ্যতা সংস্কৃতি শিক্ষা ইত্যাদি পোশাকে নিজেকে ঢেকে রাখা মানুষ আসল মানুষ নয়, এক জন ক্ষুধার্ত মানুষই প্রকৃত মানব, ‘এসেনশিয়াল হিউম্যান’। ক্ষুধার তাড়না তাকে দিয়ে সব করাতে পারে— তার সব সঞ্চয় ও বৈভব সে ছাড়তে পারে, শারীরিক-মানসিক সম্ভ্রম এতটুকু ধরে না রেখে যার কাছে খাবার মিলবে তার সামনে নতজানু, কৃতাঞ্জলি হতে পারে।
তথাকথিত সভ্য মানুষ যে দিন এই সারসত্য বুঝেছে, সে দিন থেকেই ক্ষুধাকে করে তুলেছে অস্ত্র। সত্যিকারের অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে নিমেষে বিপক্ষের প্রাণ কাড়া যায়, বাকি জীবনের জন্য করে দেওয়া যায় জীবন্মৃত। কিন্তু সে বুঝেছে, ক্ষুধাও এমন এক শক্তিশালী অস্ত্র, যা প্রয়োগের ফল মেলে অনায়াসে। ইতিহাসের নানান যুদ্ধে তাই ক্ষুধা হয়ে উঠেছে ক্ষমতাধরের প্রিয় অস্ত্র। বিপক্ষের খাদ্যের রসদ ধ্বংস করে দিলে, খাবারের সরবরাহ-শৃঙ্খলটি মুছে দিলে শত্রু ক্ষুধার্ত ও নিস্তেজ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরবে— এই কৌশল। অতীতে গড়, কেল্লা, দুর্গ গড়ে শত্রু প্রতিরোধের ভাবনায় রক্ষণের পাশাপাশি তাই গুরুত্ব পেত সংরক্ষণও, শত্রু আক্রমণ করলে পরিখা ও বিরাট প্রাচীরে ঘেরা কেল্লার মধ্যেই রাজা ও প্রজা যাতে দীর্ঘকাল খেয়েপরে বাঁচতে পারেন তা নিশ্চিত করা হত। অধুনা প্রযুক্তির হাত ধরে যুদ্ধের চরিত্রটি আমূল বদলে গিয়েছে, বহুদূর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বা বোতাম টিপেই এখন শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যায়। কিন্তু যুদ্ধাস্ত্র যতই সর্বাধুনিক ও ক্ষুরধার হোক, ক্ষুধাস্ত্র নিক্ষেপের ধারাটি কিন্তু আজও অব্যাহত।
এই সময়ের দুই বৃহৎ যুদ্ধক্ষেত্র তার প্রমাণ— ইউক্রেন ও গাজ়া। ক্ষুধা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে গাজ়ায়। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে ত্রাণ প্রবেশের দরজা খুলে দিয়েছে ইজ়রায়েল। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। অভিযোগ, ক্ষুধার্তদের ভিড় সামাল দিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা, তাতে অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, দাবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জ়াজিরার। গাজ়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এখনও ত্রাণবাহী অন্তত ২২ হাজার ট্রাক গাজ়া স্ট্রিপের বাইরে সীমান্তে আটকে রয়েছে, যার মধ্যে গাজ়ায় প্রবেশ করেছে মাত্র ৩৬টি ট্রাক। ইজ়রায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক দিনে ৯২ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৫৬ জন ত্রাণের জন্য ক্ষুধার্তদের ভিড়ে ছিলেন।গত মার্চ মাস থেকে গাজ়ায় ত্রাণ আটকে রেখেছে ইজ়রায়েল। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের পাঠানো খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রীবাহী গা়ড়ি সীমান্তে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ফলে গাজ়ায় খাদ্যের হাহাকার পড়ে গিয়েছে। গত কয়েক মাসে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও ইজ়রায়েল দুর্ভিক্ষের কথা মানতে চায়নি। গাজ়ার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সেখানে অচিরেই লক্ষ লক্ষ শিশু অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা যাবে। মানবিক স্বার্থে তাই অবিলম্বে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মাঝে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে ইজ়রায়েল। ধীরে ধীরে ত্রাণ প্রবেশের পথ খোলা হয়েছে।তেমনই ত্রাণবাহী কিছু গাড়ি গাজ়ায় ঢুকছিল। সংবাদমাধ্যমে দাবি, খাবার দেখে ক্ষুধার্তেরা গাড়ির দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। রাস্তায় কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। ফলে ত্রাণের গাড়ি নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছোতে পারেনি। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ইজ়রায়েলি সেনা নির্বিচারে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তাতেই ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। গত পাঁচ মাস ধরে গাজ়ায় জ্বালানির জোগান বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল-সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে জ্বালানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দু’টি জ্বালানির ট্রাক গাজ়ায় ঢোকে। তাতে মোট ১০৮ টন জ্বালানি ছিল। ট্রাক দু’টি মিশর হয়ে গাজ়ায় ঢুকেছে ইজ়রায়েল নিয়ন্ত্রিত কারেম আবু সালেম ক্রসিং হয়ে। রাষ্ট্রপুঞ্জের পাঠানো আরও চারটি জ্বালানিবাহী ট্রাকের গাজ়ায় প্রবেশের কথা। হাসপাতাল, বেকারি এবং লঙ্গরখানা সচল রাখার জন্য এই জ্বালানি অত্যন্ত প্রয়োজন।
যদিও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, গাজ়ায় যা চাহিদা, তা মেটাতে দিনে এখন ৬০০টি করে জ্বালানির ট্রাক প্রয়োজন। গাজ়ায় জ্বালানি আটকানোয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালগুলি। যুদ্ধদীর্ণ এলাকায় হাসপাতাল অত্যন্ত জরুরি। জ্বালানি এবং ত্রাণের অভাবে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, গুরুতর অসুস্থ বা জখম রোগী ছাড়া বাকিদের পরিষেবাই দিতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। ২০২৩ সাল থেকে ইজ়রায়েলে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ইজ়রায়েল। হামাস ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি না দিলে গাজ়ায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। চাপের মুখে কিছু দিন আগে ইজ়রায়েলি সেনা জানায়, গাজ়ার কিছু অংশে দিনে ১০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি পালন করা হবে এবং ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে। বেশ কিছু এলাকাকে ‘নিরাপদ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানে প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও হামলা হবে না। কিন্তু তার পরেও ক্ষুধার্তদের হাহাকার জারি। এই লেখা যখন লিখছি,বা আপনারা যখন এই লেখা পড়ছেন, হ্যাঁ তখনও জারি।
Advertisement



