পরিযায়ীদের রেলভাড়া বিতর্কের অবসান ঘটল। ভিন রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পূর্ণ ভাড়া বহন করবে রাজ্য সরকার। শনিবার টুইট করে একথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
টুইটে তিনি লিখেছেন, বাংলার বাসিন্দা যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্যে আটকে পড়েছিলেন, তাদের জীবনসংগ্রামকে কুর্নিশ জানাই। স্পেশাল ট্রেনে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া যেসব আটকে পড়া শ্রমিকা ফিরছেন, তাদের যাবতীয় খরচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার বহন করবে। রেলওয়ে বোর্ডকে একথা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
Advertisement
শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদবকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেনে যারা বাংলায় আসছেন, তাদের সমস্ত খরচই মিটিয়ে দেওয়া হবে রাজ্যের তরফে।
Advertisement
প্রসঙ্গত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০৫ টি বিশেষ ট্রেনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়া মানুষজন ফিরছেন রাজ্যে। এর মধ্যে পর্যটক, তীর্থযাত্রী, পড়ুয়ারাও আছেন। শনিবার স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শ্রমিক, ছাত্র, পর্যটকদের রাজ্যে ফেরানোর প্রস্তুতি সারা।
আলাপনবাবু বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার রেলভাড়া যে রাজ্য সরকার বহন করবে, সেকথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে সরকারি কোষাগার থেকে এই ব্যয় করা হচ্ছে। এর ফলে ১৬ টি রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের এই রাজ্যে আসার জন্য কোনও ট্রেনের টিকিট কাটতে হবেনা।
আলাপনবাবু বলেন, রাজ্যের সর্বমোট ১৭ লক্ষ মানুষকে নিয়ে একটি ডেটাবেস তৈরি করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে যাওয়া শ্রমিক, পর্যটক, তীর্থযাত্রী, ছাত্র যুব নাম লিখিয়েছিলেন ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার জন্য বিশেষ পরিবহণের জন্য আবেদন করেছিলেন ২ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৯৫ জন। তাদের জন্য রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলার নোডাল অফিসারকে তালিকা দিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই রাজ্যে কীভাবে আটকে পড়া মানুষজনকে ফেরানো হবে, ওই তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও জেলা ট্রেনে সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের তুলবেন।
পরিসংখ্যান বলছে, কলডাউনের সময়ে ২ লক্ষ ১৫ হাজার ৯১৫ জন এক্সিট পাস নিয়ে রাজ্যের বাইরে গিয়েছেন বিশেষ প্রয়োজনে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, সিকিম, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে থাকা বহু মানুষ নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছেন। আবার ভিন রাজ্য থেকেও বাংলায় ফিরছেন অনেকে।
অন্য রাজ্য থেকে এই রাজ্যে আসার সময়ে সীমান্তে এলে তাদের মেডিকেল টেস্ট হচ্ছে। যাতে ভিড় না হয়, সেজন্য একাধিক সেন্টার খোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি জেলাগুলির তরফেও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে।
এছাড়াও স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, আগামী দিনে বিদেশে আটকে পড়াদের বিমানে রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। আগামী ১৮ মে বাংলাদেশ থেকে ১৬০ জন যাত্রীকে নিয়ে প্রথম বিমানটি কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌছবে। এই বিমানে যাঁরা ফিরেছন, তাঁদের সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সরকারি কোয়ারেন্টাইনে নিখরচায় থাকা যাবে।
তবে তারা নিজেরা হোটেল ভাড়া নিয়েও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে হোটেলের তালিকা দিয়ে দেওয়া হবে রাজ্যের তরফে। স্বারাষ্ট্রসচিব শনিবার নবান্নে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন ভিন দেশে আটকে পড়াদের ফেরানোয় কোনও সমস্যা নেই। এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করা হচ্ছে।
Advertisement



