• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না ভারত, দাবি পাক-মন্ত্রীর

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়টি পুনরায় সামনে এনেছেন।

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়টি ফের সামনে এনেছেন। তিনি জানান, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সদা প্রস্তুত, তবে ভারত কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছে না। তিনি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবসময় আলোচনার পথ দ্বিপাক্ষিক স্তরে সীমাবদ্ধ থাকবে, তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা উচিত নয়।’

এই বিষয়ে ইশাক দার উল্লেখ করেন, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করতে চায় এবং সেই উদ্দেশ্যে আলোচনার দরজা খোলা রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির অধীনে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার যে পথ তৈরি হয়েছিল, তা থেকেই আমাদের কাছে স্পষ্ট যে কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় আলোচনা হওয়া উচিত নয়।’ তিনি বলেন, ‘ভারত যদি আলোচনায় বসতে না চায়, তবে আমরা জোর করতে পারি না।’

Advertisement

এছাড়া, তিনি ২০২৫ সালের মে মাসে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে সংঘর্ষের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। সেই সময় পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতকে আলোচনায় বসানোর জন্য প্রস্তুত, কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের জন্য তাদের সম্মতি ছিল না।

Advertisement

এই বিষয়ে ইশাক আরও বলেন, ‘গত জুলাই মাসে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে একটি বৈঠকে ভারত-পাকিস্তান আলোচনার বিষয়ে কথা হয়েছিল। ১১ মে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের কাছে মার্কো রুবিয়োর একটি বার্তা পৌঁছেছিল, যেখানে বলা হয়েছিল, আমরা খুব শীঘ্রই একটি নিরপেক্ষ জায়গায় ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের আলোচনায় বসব।’ এই আলোচনা এবং পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যত নির্ধারণ নিয়ে আরও আলোচনা হয়। তবে ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা চাইবে না।

ইশাক দার বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বিশ্বাস করি যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলি সমাধান করা উচিত, কিন্তু স্পষ্টতই, এতে উভয় পক্ষের উপস্থিতি এবং সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।’ তাঁর কথায়, ‘যদি ভারত এই আলোচনায় বসতে চায় না, তবে পাকিস্তান কখনই জোরপূর্বক আলোচনা চাপিয়ে দিতে পারবে না।’

ইশাক দার সিমলা চুক্তির উল্লেখ করেন, যা ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। চুক্তির মূল বার্তা ছিল, ‘ভারত ও পাকিস্তান কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক আলোচনা মাধ্যমে নিজেদের সমস্যার সমাধান করবে।’ এছাড়া, ১৯৯৯ সালে লাহোর ঘোষণার সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পাকিস্তানে সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তৎকালীন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। সেই সময়ে ভারতের এবং পাকিস্তানের মধ্যে একই রকম দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আহ্বান করা হয়েছিল।

‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানান সামরিক পদক্ষেপকরা হয় এবং চার দিনের সংঘর্ষের পর সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন দাবি করেছে, তাদের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়েছে। অবশ্য ভারত এই ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে কোনও তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা ছিল না। তবে, পাকিস্তান এই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা স্বীকার করে প্রশংসা করেছে।

Advertisement