রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের মাটিতে পা রাখতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। শনিবার নয়াদিল্লিতে ইউক্রেন দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ভারত সফরে আসতে পারেন জেলেনস্কি। যদিও সফরের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেকজান্দার পলিসচুক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে সফরের সময়সূচি চূড়ান্ত করবে। এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।’ রাষ্ট্রদূতের মতে, এই সফরের মাধ্যমে ভারত-ইউক্রেন সম্পর্কের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
Advertisement
এই প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্যভাবে উঠে এসেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্ভাব্য ভারত সফরের প্রসঙ্গও। চলতি বছরের শেষদিকে তাঁর ভারত সফরের জল্পনা তৈরি হয়েছে। একদিকে পুতিন, অন্যদিকে জেলেনস্কির সফরের সম্ভাবনা, দুটি ঘটনাই ভারতীয় কূটনীতিকে এক নতুন সমীকরণের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে শুরু হওয়া বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব এবং একই সঙ্গে ইউক্রেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভারসাম্য রক্ষা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, জেলেনস্কির এটি প্রথম ভারত সফর হতে চলেছে। এর আগে ২০২৩ সালে জি-৭ সম্মেলনে জাপানের হিরোশিমায়, ২০২৪ সালের জুনে ইতালিতে এবং গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘সামিট অফ দ্য ফিউচার’-এ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী ও জেলেনস্কির সাক্ষাৎ হয়েছে। এছাড়াও, ২০২৪-এর আগস্টে ইউক্রেন সফরে গিয়ে জেলেনস্কিকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর থেকেই নয়াদিল্লি বারবার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত সংঘাত নিরসনে আন্তর্জাতিক স্তরের একাধিক উদ্যোগ তেমন সফল হয়নি। সর্বশেষ আলাস্কায় আয়োজিত এক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসেন। দুই রাষ্ট্রনেতা বৈঠক সফল দাবি করলেও, চূড়ান্ত সমাধান অধরাই থেকে গিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের মাটি থেকে শান্তির বার্তা দিতে পারেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তাঁর সফর শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হয়ে উঠতে পারে, এমনটাই মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।
Advertisement



