তাহলে কি ভারত ও ইংল্যান্ডের চতুর্থ টেস্ট ম্যাচে বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণ জায়গা পেতে চলেছেন? হঠাৎ এই কথাটা উ্ঠে আসছে কেন? তার কারণ বলতেই শোনা যাচ্ছে, পরপর তিনটি টেস্টে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে করুণ নায়ার জায়গা পেলেও, তাঁর ব্যাট থেকে সেইভাবে কোনও রান আসেনি। প্রথম টেস্টে ভারতের হার, দ্বিতীয় টেস্টে জয় পেলেও আবার তৃতীয় টেস্টে হারের মুখে পড়তে হয় শুভমন গিলদের ভারতীয় দলকে। তৃতীয় টেস্টে লর্ডসের মাঠে ক্রিকেটারদের দোষেই ভারতীয় দলকে হারতে হয়েছে। একাধিক নাটকীয় মুহূর্তের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ভারত জয়ের দোড়গোড়ায় পৌঁছতে পারেনি।
তবে শেষ চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন না লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে জাদেজার সঙ্গে সঙ্গী হয়েছিলেন, সেই সময় অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন হয়তো ভারতীয় দলের জয় দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে যে রান আশা করা যায়, সেখান থেকে কখনওই লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা বড় অঙ্কের রান তুলে আনতে পারেন না। এটাই স্বাভাবিক। তবুও কুর্নিশ করতে হবে রবীন্দ্র জাদেজাকে। আগামী ২৩ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ। এই টেস্টে আবার কীভাবে জয়ের মুখ দেখা যায়, তার জন্য কাটাছোঁড়া সমীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় শিবিরে। কোচ গৌতম গম্ভীরও চাইছেন একাধিক খেলোয়াড়কে বাদের তালিকায় রেখে নতুন দলকে মাঠে নামানো।
বীরেন্দ্র সেহবাগের পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের হয়ে করুণ নায়ার এক ইনিংসে ৩০০ রান করে রেকর্ড করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বাদে আন্তর্জাতিক স্তরে খেলার সুযোগ পেয়ে এই অভিজ্ঞ করুণ নায়ার সেইভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারেননি চলতি সিরিজে। তাই এবারে বাদের তালিকায় প্রথম নামটা থাকবে করুণ নায়ারের।
Advertisement
করুণ নায়ার প্রথম টেস্টে হেডিংলেতে ছ’নম্বরে খেলতে আসেন মাঠে। প্রথম ইনিংসে তিনি শূন্য এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০ রান করেন। আর বার্মিংহামে প্রথম ইনিংসে তিনি ৩১ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রান করেন। কিন্তু তৃতীয় টেস্টে লর্ডসের মাঠে প্রথম ইনিংসে ৪০ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪ রানে আউট হয়ে যান। তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পরেই ভারতীয় শিবিরে চাপ পড়ে যায়। কিন্তু সেই করুণ নায়ারকে নিয়ে কোচ আর ভাবতে রাজি হচ্ছেন না। যখন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন কোনওভাবেই করুণ নায়ারকে দলে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে না। সেই জায়গায় বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণকে পরীক্ষা করা হবে কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। অভিমন্যু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। এমনকি ভারতীয় ‘এ’ দলের অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু জাতীয় দলে এখনও পর্যন্ত খেলার সুযোগ আসেনি। তবে অভিমন্যু ১০৩টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোট ৭৮৪১ রান করেছেন। তিনি যদি চতুর্থ টেস্টে জায়গা পান, তাহলে প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিও একজন হতে পারেন। প্রয়োজনে তিনি ওপেনার হিসেবেও মাঠে নামতে পারেন।
Advertisement
লর্ডসের মাঠে তৃতীয় টেস্টে ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়াল বড় রান করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে তিনি ১৩ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে কোনও রান না করে প্যাভিলিয়নে ফেরত গিয়েছিলেন। হয়তো সেই কারণেই বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণের শিকে ছিঁড়তে পারে।
অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই ভারতীয় শিবিরে শোনা যাচ্ছে, ভারতের অন্যতম সেরা বোলার যশপ্রীত বুমরা ভালো উইকেট পেলেও যে ম্যাচেই তিনি খেলছেন, সেই ম্যাচেই ভারত হারছে। ঘটনাচক্রে প্রথম ও তৃতীয় টেস্টে বুমরা খেলেছেন এবং ভারত হেরে গেছে। এই পরিসংখ্যান মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার ডেভিড লয়েড। অবশ্য খেলার মধ্যে এই ঘটনা কখনওই প্রযোজ্য হয় না। কাকতলীয়ভাবে এই কথাটি এসে গেল বুমরার নামের পাশে।
Advertisement



