টানা বৃষ্টিপাত, হড়পা বান ও ধসের জেরে হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন অংশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৪ জন। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মান্ডী জেলায়। সেখানে ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন অন্তত ৩০ জন, যাঁদের উদ্ধারে তৎপরতা জারি রেখেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং সেনাবাহিনী।
দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল হওয়ায় উদ্ধারকাজে বাধা তৈরি হচ্ছযে রবিবার ফের ঝড় ও অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। বিশেষ করে মান্ডী, কাংড়া এবং সিরমৌর জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় উদ্ধারকাজ আরও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মান্ডীর ডেপুটি কমিশনার অপূর্ব দেবগন বলেন, ‘নিখোঁজদের সন্ধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু দুর্গম ভূপ্রকৃতি ও লাগাতার দুর্যোগের কারণে উদ্ধারকার্যে বাধা আসছে।’ থুনাগে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধারে ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছে।
Advertisement
প্রশাসনের হিসেবে, বিগত দু’সপ্তাহে রাজ্যজুড়ে হড়পা বান, মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কোটি টাকার সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত ১১৫। রাজ্যজুড়ে বন্ধ রয়েছে ২৩৮টি রাস্তা – কোথাও হড়পা বানে রাস্তা ভেসে গিয়েছে, কোথাও ধস নেমে পথরুদ্ধ, আবার কোথাও জলমগ্ন রাস্তায় যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।
Advertisement
উল্লেখ্য, গত বছরও এমনই ভারী বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি হয় হিমাচলের। প্রাণ হারান ৫৫০ জন। স্টেট ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টারের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর মতে, ক্ষতির পরিমাণ কোনওমতেই ৭০০ কোটি টাকার কম নয়। সরকারি সূত্রে খবর, বৃষ্টিতে ধস নেমে প্রায় ৩০০টি ট্রান্সফরমার এবং ২৮১টি জল সরবরাহ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Advertisement



