কসবার আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার আবেদন জানানো হল। সত্যম সিং নামে এক আইনজীবী এই আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা এবং ওই তরুণীর জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবিও জানানো হয়েছে আদালতে। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, সোমবার এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এর পরে আবেদনকারীকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
অবশ্য নির্যাতিতার এক আত্মীয় জানিয়েছিলেন, ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিশ ও প্রশাসনের উপরেই ভরসা করছেন তাঁরা। সত্যম সিংয়ের দায়ের করা আবেদনটিতে এই ঘটনায় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্রের ‘অযাচিত মন্তব্যের’ প্রসঙ্গও উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গত, কল্যাণ এবং মদন নির্যাতিতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ইতিমধ্যেই কামারহাটির বিধায়ক মদনকে শোকজ করেছে তৃণমূল।
Advertisement
কসবার ঘটনার তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর চেয়ারম্যান হিসেবে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে রাখা হোক, সেই আবেদনও করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কসবাকাণ্ডের তদন্তে প্রথমে পাঁচ সদস্যের সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করা হয়। পরে সিটের সদস্য সংখ্যা ৯ করা হয়। যে চার জন নতুন যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা সাব ইনস্পেক্টরও রয়েছেন। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষালের নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত করছে সিট।
Advertisement
২৭ জুন দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়টি সামনে আসে। বুধবার তাঁর উপর নির্যাতন চালানো হয় বলে দাবি নির্যাতিতার। পরের দিনে অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কসবা থানায়। ওই দিনই মনোজিৎ মিশ্র (৩১), জইব আহমেদ (১৯) এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ওই কলেজের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে সেখানে কাজ করছিলেন। পরে ওই কলেজের নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘সহপাঠী যদি সহপাঠিনীকে ধর্ষণ করেন, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা দেবে কে?’ অন্যদিকে, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের মন্তব্য নিয়েও বিস্তর শোরগোল পড়ে যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘মেয়েটি না গেলে এ ঘটনা ঘটত না। সেখানে যাওয়ার আগে যদি জানিয়ে যেত বা কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে যেত, তাহলেও এ ঘটনা এড়ানো যেত।’ এর পর তৃণমূলের অফিশিয়াল সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে এই দুই নেতার মন্তব্যের নিন্দা করা হয়।
Advertisement



