• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আমেরিকা হস্তক্ষেপ করলে বাঁধবে যুদ্ধ, ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি ইরানের

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ এর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ এর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইরানের উপর তীব্র ইজরায়েলি বিমান হামলার মধ্যেও টেলিভিশনে সম্প্রচারিত একটি রেকর্ড করা বক্তৃতায়, শুক্রবারের পর তার প্রথম উপস্থিতি বুঝিয়ে দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। তিনি বলেন যে, ‘আমেরিকার জানা উচিত যে কোন মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসবে।’ মূলত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে খামেনেই বার্তা দিয়েছেন, ইরানের উপর ‘যুদ্ধ’ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর কাছে তাঁরা মাথা নত করবে না। কোনও ‘চাপিয়ে দেওয়া শান্তি’র কাছেও মাথা নত করবে না ইরান।

টেলিভিশন বার্তায় খামেনেই বলেন, ‘বুদ্ধিমান মানুষ, যাঁরা ইরান, ইরানি জাতি এবং এর ইতিহাস জানেন তাঁরা কখনওই এই জাতির সঙ্গে হুমকির ভাষায় কথা বলবেন না। কারণ ইরানি জাতি আত্মসমর্পণ করে না। ইজরায়েলকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘আরোপিত যুদ্ধের মুখে ইরান কঠোর অবস্থান নেবে। আরোপিত শান্তির বিরুদ্ধেও ইরানের অবস্থান সমান হবে। আরোপের মুখে এই দেশ কারও সামনে আত্মসমর্পণ করবে না।’

Advertisement

প্রসঙ্গত, খামেনেইয়ের আগেও দেশের রাষ্টদূতরা একই বার্তা দিয়েছিলেন। দেশের জনগণ এবং জমি রক্ষা করতে কোনও আপস বা সংযম যে ইরান দেখাবে না তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। শুধু ইজরায়েলকেই নয়, আমেরিকাকেও এদিন হুমকির সুরে ইরানের সরকার জানিয়ে দিয়েছে যে, যদি কোথাও প্রমাণ মেলে যে, ইজরায়েলি হামলায় ওয়াশিংটনের প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে, তবে আমেরিকাতেও প্রত্যাঘাত করা হবে। জেনেভায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরে তেহরানের দূত স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইজরায়েলি হানায় আমেরিকার প্রত্যক্ষ যোগ থাকলে, তাদেরও মূল্য দিতে হবে।
খামেনেই আরও বলেছেন, ইরানের প্রত্যাঘাতে কোনওরকম সংযম দেখানো হবে না এবং প্রত্যাঘাত হবে ইজরায়েলি হানার সমতুল এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনেই। তাঁর কথায়, আমাদের দেশের নাগরিক, নিরাপত্তা ও জমির সুরক্ষায় আমরা কোনও বাধা মানব না। আমরাও কঠোরভাবে এর মোকাবিলা করব। অন্যদিকে, ইতালি ও স্পেনে কর্তব্যরত ইরানি রাষ্ট্রদূতরাও একই সুরে জানিয়েছেন, ইজরায়েল জোরজবরদস্তি আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট করেছে, যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরানও এর জবাব দেবে এবং আরও কঠিন ভাষায়।

Advertisement

এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসৌদ পেজেশসিয়ান বুধবার বলেছেন, ইজরায়েলি হামলার জবাবে জনমত তৈরি করে দেশবাসীকে একত্রিত করতে হবে। স্থানীয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ইজরায়েল বিরোধী জনমত গড়ে তোলায় উৎসাহ দিতে হবে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন, দেশের বাইরেও এই পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি। সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

ইজরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ৫০টি ইজরায়েলি জেট তেহরানে রাতারাতি প্রায় ২০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে কাঁচামাল, এবং ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ব্যবহৃত নানা উপাদান ও উৎপাদন ব্যবস্থা রয়েছে। ইরান এবং ইজরায়েল পরস্পরকে লক্ষ্য করে লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে চলেছে। ইরানের সঙ্গে আমেরিকার পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত বৈঠকও ভেস্তে গিয়েছে। এরই মাঝে খামেনেইয়ের আত্মসমর্পণ না করার বার্তায় ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের মেয়াদ ও জটিলতা আরও বাড়ল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

Advertisement