বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কাছারিবাড়িতে ভাঙচুর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জঘন্য কাজ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলতে মোদীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র বাংলাতেই নন, সমগ্র বিশ্বে বিখ্যাত।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথের পৈতৃক বাড়িটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে একটি পর্যটক পরিবারের বচসা হয়। বিষয়টি গড়ায় হাতাহাতি ও মারপিট পর্যন্ত। সেই গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি রবীন্দ্রনাথের কাছারিবাড়িতে ঢুকে পড়ে। মিছিলে থাকা কয়েকজন দুষ্কৃতী বাড়িটির তত্ত্বাবধায়কের অফিস, প্রেক্ষাগৃহের জানালা, দরজা ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পর সেই বাড়িতে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। তবে এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।
Advertisement
এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাংলাদেশের সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি শোকপ্রকাশ করেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবদ্দশায় বহু বার ওই বাড়িতে গিয়েছেন। সেখানে তিনি বহু উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন। এই কাছারিবাড়ির সঙ্গে তাঁর বহু সৃষ্টিশীলতার সম্পর্ক রয়ে গিয়েছে। ফলে এটি শুধুমাত্র একটি নিছক বাড়িই নয়, তা এই উপমহাদেশে সৃজনশীলতার একটি সুউচ্চ ফোয়ারার মতো। এরকম একটি স্মৃতি বিজরিত বাড়িতে ভাঙচুর করা আমাদের জাতীয় গৌরব ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। স্বদেশী আন্দোলনের সময় কবি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে এখান থেকেও প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন। কবির কাছারিবাড়িতে আঘাত করা মানে এই মহান কবির অমর সৃষ্টির মূলে আঘাত করা। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই যা ক্ষতি হয়েছে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ হলে ভবিষ্যতে এই সাংস্কৃতি ঐতিহ্যের উপর আর আঘাত আসবে না। রবীন্দ্রনাথ শুধু বাংলারই নন, তিনি সমস্ত বিশ্বের।
Advertisement
Advertisement



