প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার সঙ্গে লড়াই করার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। করোনা সংকটে সবকিছু নিয়ে সরকার দেশবাসীর পাশে আছে। এ ভাইরাসের সংক্রমণরোধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল এক ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে ধৈর্যের সঙ্গে এই সংকট মোকাবিলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাঙালি কখনও হারেনি, আমরা কখনও হারবো না। এ আত্মবিশ্বাস সবাইকে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে, অন্যকেও সুরক্ষিত রাখতে হবে। অন্যদের প্রতিও আমাদের একটা দায়িত্ববোধ আছে। সেই দায়িত্ববোধ নিয়ে চললে দ্রুতই আমরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে পারবো। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের খাদ্যে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা আমাদের চালাতে পারবো, পাশাপাশি আমরা অনেককে সহযোগিতা করতে পারবো।
Advertisement
আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা নিয়মিত ব্রিফিংএ বলেছেন, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে একজন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আরও ৪ জন। এ সময়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা নেই। তবে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনার উপসর্গ সর্দি, কাশি ও শাসকষ্ট নিয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
Advertisement
এদিকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি যত গড়াচ্ছে রাজধানীর রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা তত বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ১০ দিনের এ ছুটির প্রথম ও দ্বিতীয় দিন প্রায় ফাঁকাই ছিল রাজপথ। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নাগরিক চলাচলে কিছুটা শিথিলতা ঘোষণার পর তৃতীয় দিন রোববার থেকে সাধারণ মানুষের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা গেছে। আজ সোমবার লোকজনের চলাচল আরও বেড়েছে।
অবশ্য এই ঘর থেকে বাইরে বেরুনোর কারণ বিশেষ প্রয়োজন। কেউ বের হচ্ছেন খাবার কিনতে, কেউবা বাজারে যাচ্ছেন। গত দু’দিনে সীমিত পরিসরে কয়েকটি খাবারের দোকানও খোলা রাখতে দেখা গেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শনিবার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১০টি নির্দেশনা পাঠান। এতে বলা হয়, অনেক মানুষের রান্নাবান্নার ব্যবস্থা নেই, তাই তাদের জন্য খাবার হোটেল, বেকারি খোলা থাকবে। এসব হোটেল-বেকারিতে কর্মরতদের সড়কে চলাচল করতে দিতে হবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য পণ্যের দোকান খোলা থাকবে এবং এসব দোকানে কর্মরতরা কাজে যোগ দিতে পারবেন। হোটেল থেকে গ্রাহকদের খাবারের পার্সেল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ‘সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে’ কেউ হোটেলে বসে খেতে পারবেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় যে কোনও নাগরিক একা যে কোনও মাধ্যম ব্যবহার করে চলাফেরা করতে পারবেন বলেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে। কার্যত এই নির্দেশনার পরই রাজধানীর রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। রাস্তায় উল্লেখযোগ্য হারে রিকশাও চলছে। শিথিলতার ঘোষণা আসার পর কিছু দোকানও খুলেছে। তবে দোকানপাটের সামনে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতের জন্য রাস্তায় দাগ কেটে দেওয়া হয়েছে।
Advertisement



