পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। তিনি এই হামলার পিছনে কার্যত কেন্দ্র সরকারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। শনিবার বাঁকুড়ার তামলি বাঁধ ময়দানে এমপি কাপ ফাইনাল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন কীর্তি। সেখানেই পহেলগামে জঙ্গি হামলা নিয়ে মুখ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন। সাংসদের বক্তব্য, ‘২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার ঘটনার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম পদত্যাগ করেছিলেন। এবার কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর নারকীয় জঙ্গি হামলার পর বর্তমান কেন্দ্র সরকারের কেউই দায়িত্ব নিতে চাইছেন না।’ তিনি সরাসরি শাহ-ডোভালকে নিশানা করে অভিযোগ করেন, ‘কাশ্মীরে এই জঙ্গি হামলা তো ইন্টেলিজেন্স ফেলিওরের ফসল। এতদিন ধরে তারা ওই এলাকায় রেকি করল, আর কেউ কিছু জানল না?’
তৃণমূল সাংসদের এই অভিযোগ যে একেবারে ভিত্তিহীন নয়, শনিবার তার কিছুটা প্রমাণ মিলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টে। এনআইএ রিপোর্টে স্পষ্ট দাবি করা হয়েছে, পর্যটকদের উপর যে হামলা হতে পারে, তার আগাম খবর পেয়েছিল গোয়েন্দারা। যদিও গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়, শ্রীনগরের পার্শ্ববর্তী জবরবান রেঞ্জের তলহাটির হোটেলে আশ্রয় নেওয়া পর্যটকদের উপর হামলা হতে পারে। সেইমতো ওই অঞ্চলে ব্যাপক সতর্কতা জারি করা হয়। শ্রীনগরে ক্যাম্প করে দাচিগাম, নিশাত সংলগ্ন এলাকায় জোরদার তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। কিন্তু কারও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেজন্য মাঝপথে বন্ধ হয় তল্লাশি অভিযান। ঠিক সে দিনই বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের বুলেটে প্রাণ হারান ২৫ জন পর্যটক ও একজন টাট্টু চালক।
Advertisement
প্রসঙ্গত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যুর হয়েছে জনের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ২৫ জন নিরীহ পর্যটক এবং একজন টাট্টু চালক। মৃতদের মধ্যে ছুটিতে থাকা একজন নিরস্ত্র নৌসেনাও ছিলেন। এদিকে ঘটনার পর এগারো দিন হয়ে গেলেও হামলাকারী জঙ্গিরা এখনও অধরা। ইতিমধ্যে এনআইএ সহ অন্যান্য গোয়েন্দা রিপোর্ট সামনে এসেছে। তাতে জানা যাচ্ছে, হামলার পিছনে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। অনুমান করা হচ্ছে, আইএসআই-লস্কর-পাক সেনার সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের ফলে এই ঘটনা ঘটেছে।
Advertisement
আর যেহেতু কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে রয়েছেন যথাক্রমে শাহ এবং ডোভাল, সেজন্য দু’জনকেই তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন। তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে নিশানা করে বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটানোর আগে দেড় মাস ধরে জঙ্গিরা রেকি করেছে, তারপরেও কেন কারও কাছে খবর এল না?’
উল্লেখ্য, প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ পূর্বে বিজেপি নেতা ছিলেন। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছেন তিনি। দলের একজন নেতা ও সাংসদ হিসেবে জাতীয় স্তরে নানা ইস্যুতে দলের হয়ে ব্যাট ধরেছেন তিনি। এবার পহেলগাম ইস্যুতেও কেন্দ্রকে তুলোধোনা করলেন।
Advertisement



