পহেলগামে জঙ্গিদের হত্যালীলা চালানোর পর জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় জোরদার করা হয়েছে তল্লাশি অভিযান। বুধবার উরি সেক্টরে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে দুই জঙ্গিকে নিকেশ করে ভারতীয় সেনা। বৃহস্পতিবার ফের জোরকদমে তল্লাশি অভিযান চালানো হয় জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুর জেলায়। সেই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে এক সেনা জওয়ান নিহত হন বলে খবর মিলেছে।
জম্মুর উধমপুরে জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়েছে, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে খবর মেলার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকা ঘিরে ফেলে সেনা ও পুলিশের যৌথবাহিনী। জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চালানোর সময় উধমপুরের বসন্তগড় এলাকায় সেনাকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। হোয়াইট নাইট কর্পস জানিয়েছে, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বসন্তগড় এলাকায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে এক জওয়ান আহত হন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় গুরুতর জখম ওই সেনা জওয়ানের। নিহত জওয়ানের নাম ঝন্টু আলি শেখ। তিনি ৬ প্যারা এসএফ-এ কর্মরত ছিলেন।
তবে জঙ্গিরা সংখ্যায় মোট কত জন রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়নি। জঙ্গিদের ধরতে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে সেনার রোমিও ফোর্স। ঘটনাস্থল থেকে শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, অভিযান চলছে।
Advertisement
অন্যদিকে ভারতীয় সেনার রোমিও ফোর্স এবং স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ টানা ১০ দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চের লাসানার জঙ্গলে তাদের যৌথ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সেখানে কয়েকজন জঙ্গি আত্মগোপন করে রয়েছে বলে খবর। তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। গত ১৫ এপ্রিল এই জঙ্গলেই নিরাপত্তাবাহিনী এবং জঙ্গিদের সংঘর্ষে এক জওয়ান আহত হয়েছিলেন।
Advertisement
এর পাশাপাশি জম্মু-রাজৌরি-পুঞ্চগামী রাস্তাগুলিতে তল্লাশি চলছে। মুঘল রোডেও নজরদারি চালাচ্ছে সেনা। মঙ্গলবার পহেলগামে পর্যটকদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়। পহেলগামের বৈসরনের এই হামলা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় সবথেকে ভয়াবহ হামলাগুলির মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৯ এর ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় একটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এক হামলাকারী। যার পরিণতিতে নিহত হন ৪০ জন সিআরপিএফ কর্মী। ৭৮টি বাসে করে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান জম্মু থেকে যাচ্ছিলেন শ্রীনগরে। মাঝ পথে হামলা চালায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। ২২ বছরের আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদ বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি সিআরপিএফ-এর কনভয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যান ৪০ জন জওয়ান। উপত্যকায় ৩০ বছরের মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ হামলা ছিল সেটি।
Advertisement



