মোহনতরী যেভাবে ছুটছে, তা প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাই তো কোচ হোসে মোলিনার একটাই কথা, আমরা লড়াই করছি শুধু জয় পাওয়ার জন্য। কোনওভাবেই পয়েন্ট হারাতে চাই না। তবে মনে রাখতে হবে, অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলার প্রয়োজন নেই ফুটবলারদের। খেলতে হবে আক্রমণাত্মক ভূমিকায়। ছোট বা বড় দল নয়, সবার বিরুদ্ধেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে জয়ের হাসি হাসতে হবে। বিপক্ষ দলকে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। হালকা চালে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করার অর্থই হার মেনে নেওয়া। তা চলবে না। এমনই নির্দেশ দিয়ে কোচ খেলোয়াড়দের বলেছেন, শেষ খেলা পর্যন্ত প্রতিটি লড়াই হবে মরণ-বাঁচন। যাঁরা দূর থেকে বলছেন লিগ-শিল্ড জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছি, তাঁদের সাবধান করে বলতে চাই, ফুটবলারদের অনুপ্রেরণা দিন পরবর্তী ম্যাচগুলি জেতার জন্য।
এদিকে সুনীল ছেত্রীদের বেঙ্গালুরু এফসি’কে হারিয়ে দিয়ে পাঞ্জাব এফসি দল মনে করেছিল হয়তো মোহনবাগান সুপারজায়ান্টসকে চাপের মধ্যে রেখে দেবে। কিন্তু সেই ভাবনা বাস্তবে রূপ পেল না। বরঞ্চ মোহনবাগানের ঝড়ের ঝাপটায় তাদের সমস্ত চিন্তাভাবনা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। প্রতিপক্ষ দলের রক্ষণভাগে যেভাবে ফাটল ধরেছিল, তাতে আরও বেশি গোলে জেতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়ার কথা ছিল না। মোহনবাগান ৩-০ গোলে পাঞ্জাব এফসি’কে হারিয়ে আইএসএল ফুটবলে লিগ-শিল্ড জয়ের পথকে কিছুটা প্রশস্ত করলেও এখনও জোর গলায় বলতে পারা যাচ্ছে না আগামী দুটো ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত। তার মধ্যে অবশ্যই জামশেদপুর এফসি’কে সমীহ করে খেলতে হবে।
Advertisement
জামশেদপুরের কোচ খালিদ জামাল দেখিয়ে দিয়েছেন, একটা দল পিছিয়ে থেকে কীভাবে প্রথম সারিতে আসা যায়। এই মুহূর্তে লিগ টেবলে জামশেদপুর দল দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সেই কারণেই জামশেদপুর দলকে এগিয়ে রাখতে হবে। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে মোহনবাগান প্রথম পর্বে কোনও গোল করতে পারেনি। বরঞ্চ পাঞ্জাবের পেত্রোস জিয়াকউমামিচের একটি শট মোহনবাগানের গোল পোস্টে গিয়ে আঘাত করে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে মোহনবাগানের চেহারা একেবারেই বদলে যায়। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার জেমি ম্যাকলারেন ও লিস্টন কোলাসোর জোড়া আক্রমণে পাঞ্জাবের দুর্গ ভেঙে যায়। পাঞ্জাবের কোচ আগেই স্বীকার করেছিলেন, যে দলে লিস্টন কোলাসোর মতো ফুটবলার থাকে, তাদের নিয়ে আগাম কোনও মন্তব্য করা যায় না। মোহনবাগানের প্রথম গোলটি আসে জেমি ম্যাকলারেনের দুরন্ত শটে। এই গোলটা অবশ্যই দীর্ঘদিন সবার মনে গেঁথে থাকবে। আর মোহনবাগানের দ্বিতীয় গোলটি করেন লিস্টন কোলাসো। কোলাসোর গোল হওয়ার পরেই দর্শকদের গ্যালারিতে মোহনবাগানের নামে জয়ধ্বনি শোনা যায়। খেলা ভাঙার কয়েক মিনিট আগে আবার গোল মোহনবাগানের। এবারের গোলদাতা সেই জেমি ম্যাকলারেন। অস্ট্রেলিয়ার এই স্ট্রাইকার নিজেকে অন্যভাবে প্রমাণ করলেন, তিনি বিশ্বকাপার।
Advertisement
তবে এদিন মোহনবাগান পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ব্যাপারে রেফারিকে একহাত নিয়েছেন সচিব দেবাশিস দত্ত। তিনি বলেছেন, আইএসএল ফুটবলে কয়েকটি দল চিৎকার করে থাকে রেফারি ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাহলে মোহনবাগান যে পেনাল্টিটা পেয়েছিল, এ ব্যাপারে কেন তাঁরা মুখ খুলছেন না?
Advertisement



