বাবা অর্থাৎ প্রয়াত বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের রেকর্ড ভেঙে হাড়োয়া উপনির্বাচনে জয়ের মুকুট পরলেন তৃণমূল প্রার্থী শেখ রবিউল ইসলাম। ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৮৮ ভোটের ব্যবধান নিয়ে জয়ী হলেন নুরুল-পুত্র। তাঁর জয়ের দাপটে ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারলো না বিরোধীরা। রবিউলের প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭২ টি। বিধানসভা উপনির্বাচনে বাবার রেকর্ড ভেঙে জয়ী হয়ে নুরুল-পুত্র বলেন, ‘হাড়োয়ার মানুষ রেকর্ড তৈরি করেন, আবার সেই রেকর্ড তাঁরাই ভাঙেন। রেকর্ড ভাঙার পিছনে তাঁদের অবদানকে কুর্নিশ জানাচ্ছি আমি৷ এর পিছনে আমার কোনও হাত নেই, এই জয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জয়। বাবার ফেলে যাওয়া অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করাই হবে আমার প্রাধান্য। এই জয় আমার বাবাকে উৎসর্গ করলাম। মমতা বন্দোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের উপরই আস্থা রেখেছেন সাধারণ মানুষ।’
প্রসঙ্গত, হাড়োয়ায় তৃণমূলের জয় একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। শনিবার সকাল থেকেই হাড়োয়া কেন্দ্রে শাসকদলের ক্রমশ পাল্লা ভারী হতে দেখা যায়। অন্তিম চিত্রেও বিশেষ বদল ঘটল না। এদিন বিকালে জয়ের শংসাপত্র হাতে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ‘ভিক্ট্রি সাইন’ দেখান রবিউল। জয়ের পর তিনি বলেন, ‘আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যেভাবে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুৎসা করা হয়েছে, চক্রান্ত করা হয়েছে, বিভিন্ন কটুক্তি করা হয়েছে এবং যেভাবে আমাদের সরকারকে কালিমালিপ্ত করার প্রয়াস করেছে বিরোধীরা, তার বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ এই গণতান্ত্রিক রায় দিয়েছেন।’
Advertisement
উল্লেখ্য, হাড়োয়া কেন্দ্রেই একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম। রবিউলের জয়ের পশ্চাতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে অভিজ্ঞ দলীয় নেতৃত্বদের পরামর্শ এবং তাঁর বাবা অর্থাৎ হাজি নুরুলের দীর্ঘদিনের জনসেবা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই নির্বাচনী কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তাঁরা বারংবার রবিউলের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে নেমে ঝড় তুলেছেন, জনসংযোগ করেছেন, এমনকি রাজনীতিতে ‘নবীন’ রবিউলকে রাজনৈতিক পাঠও পড়িয়েছেন। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও রবিউলের সমর্থনে প্রচারে নেমেছিলেন।
Advertisement
এছাড়াও নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে সর্বদা দেখা গিয়েছে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান সরোজ ব্যানার্জী, হাড়োয়া নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আসের আলিকেও। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে রবিউল জানিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনে জিতে তাঁর বাবার প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে পরিচালিত হবেন। মুখ্যমন্ত্রীর অগণিত জনকল্যাণমূলক প্রকল্প, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কর্মদক্ষতা এবং হাজি নুরুলের নিরলস অধ্যবসায়ের উপর আস্থা রেখেই হাড়োয়ার মানুষ যে ফের তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
Advertisement



