• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

কোলে চড়েই এমএ পরীক্ষা, নজির গড়লেন রবিউল 

তিনচাকার গাড়ির আবেদন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়ে গ্রামের দরিদ্র ছেলে মেয়ের পাশে দাঁড়ানোই রবিউলের একমাত্র লক্ষ্য।

ফাইল চিত্র

ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। কথাটি ফের প্রমাণ করে দিয়েছে ডোমকল থানার শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিরল জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল রবিউল। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় তাঁর দুই পা। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করলেও কোনো ফল মেলেনি। কিন্তু চোখে তাঁর শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আর মনে অদম্য জেদ।

শারীরিক প্রতিকূলতার সামনে কিছুতেই হার মানবেন না তিনি। ভগীরথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে ভালো নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন রবিউল। এরপরই ভর্তি হন ডোমকল কলেজে। এবার কলেজের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছেছে সে। বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠতে হয় পরীক্ষার হলে। হাঁটা-চলার শক্তি নেই। অগত্যা বাবার কোলে চেপেই এমএ পরীক্ষা দিচ্ছেন রবিউল ইসলাম। রবিউলের বাবা লুৎফর রহমান পেশায় খেতমজুর। তাঁর বক্তব্য, ডোমকল কলেজেও কোলে করে নিয়ে যেতে হত ছেলেকে। ৭১ শতাংশ নম্বর পেয়ে ইতিহাসে অনার্স পাস করেছে ছেলে। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর অবশ্য ছেলেকে রোজ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।

Advertisement

একদিকে পরিবার টানতে খেতমজুরের কাজ আর অপরদিকে ছেলের শারীরিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাঁর পাশে থাকা। একসঙ্গে দুটিকে সামলাতে পারেননি রবিউলের বাবা। তাই সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লাস করতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকার পূর্ণ সহযোগিতা তাঁরা পেয়েছেন। রবিউলের বাবা জানিয়েছেন, স্কুলে হুইল চেয়ারে যাতায়াত করলেও বাসে করে হুইলচেয়ারে বহরমপুর আসা তাঁদের পক্ষে সম্ভব না। সেই কারণে, তিনচাকার গাড়ির আবেদন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়ে গ্রামের দরিদ্র ছেলে মেয়ের পাশে দাঁড়ানোই রবিউলের একমাত্র লক্ষ্য।

Advertisement

Advertisement