ওয়াশিংটন, ২৮ আগস্ট— মার্কিন বায়ুসেনার আধুনিকতম যুদ্ধবিমানে এফ-৩৫-এর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আলাস্কার আকাশে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে বিধ্বস্ত হওয়া ওই যুদ্ধবিমানের ভয়াবহ ভিডিও ফের ভাইরাল হওয়ায় প্রতিরক্ষা মহলে উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় শুধু প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়, যুদ্ধবিমানের গুণমান নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে নির্মাতা সংস্থা লকহিড মার্টিন।
২০২৫ সালের শুরুতে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার সময় বিমানটি উড়ে গিয়েছিল আলাস্কার শীতল আকাশে। উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই পাইলট যান্ত্রিক ত্রুটি লক্ষ্য করেন। তিনি দ্রুত ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে প্রায় ৫০ মিনিট ধরে কনফারেন্স কলে সমাধানের চেষ্টা চালান। কিন্তু ত্রুটি এতটাই জটিল ছিল যে, বিমান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষ মুহূর্তে প্রাণ বাঁচাতে পাইলট প্যারাশুট নিয়ে বিমান থেকে ঝাঁপ দেন। মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সেই ঝাঁপ প্রাণ বাঁচালেও, যুদ্ধবিমানটি রানওয়ের কাছেই ভেঙে পড়ে এবং ধ্বংস হয়ে যায়।
Advertisement
এয়ার ফোর্সের তদন্তে উঠে আসে আরও চমকপ্রদ তথ্যে দেখা যায়, বিমানের ‘নোজ’ এবং প্রধান ‘ল্যান্ডিং গিয়ারের’ হাইড্রোলিক লাইনে বরফ জমে গিয়েছিল। হাইড্রোলিক তরলের এক-তৃতীয়াংশই জলে ভর্তি ছিল, যার ফলে সঠিকভাবে ল্যান্ডিং গিয়ার খোলা যায়নি।
Advertisement
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সমস্যা কেবল যান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার জন্য নয়, বরং খরচ কমানোর চেষ্টাতেও হতে পারে। ২০২১ সালে যেখানে প্রতিটি এফ-৩৫-এর দাম ছিল প্রায় ১৩৫.৮ মিলিয়ন ডলার, ২০২৪ সালে প্রতিরক্ষা দপ্তরের সঙ্গে নতুন চুক্তির পর সেই দাম কমে দাঁড়ায় ৮১ মিলিয়ন ডলারে। অনেকের অভিযোগ, এই ব্যয় সংকোচনের প্রভাব পড়েছে বিমানটির গুণমানে।
উল্লেখ্য, লকহিড মার্টিনের এফ-৩৫ প্রকল্প শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে। উচ্চ ব্যয়, জটিল প্রযুক্তি এবং বারবার যান্ত্রিক সমস্যার কারণে প্রশ্ন উঠেছে এর কার্যকারিতা নিয়েও। দুর্ঘটনার ভিডিও ফের ভাইরাল হওয়ায় মার্কিন বায়ুসেনার চাপ আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement



