• facebook
  • twitter
Wednesday, 13 August, 2025

আম্বানির সঙ্গে গাঁটছড়া ট্রাম্পের বাণিজ্যিক সংস্থার, ওয়াশিংটনের রাজপথে বাড়ছে রাজনৈতিক বিতর্ক

এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটনে রাজনীতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ব্যবসায়িক চুক্তি প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন আমেরিকার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গোষ্ঠীর সঙ্গে বাণিজ্যিক গাঁটছড়া বাঁধল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যিক সংস্থা। ফলে এই চুক্তি শুধুমাত্র দুটি ধনকুবের ও ক্ষমতাধর ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্তি নয়, বরং ট্রাম্প গোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক রিয়েল এস্টেট চুক্তির ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। ওই জার্নালে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে, মুকেশ আম্বানি পরিচালিত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়িক সংস্থা ‘ট্রাম্প টাওয়ার’ ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে মুম্বইয়ে একটি বিলাস বহুল আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই মেগা-প্রকল্প নির্মাণে ট্রাম্প গোষ্ঠীর নাম ও ব্র্যান্ড ব্যবহার করা হবে। বিনিময়ে ট্রাম্পের সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের ডেভলপমেন্ট ফি প্রদান করছে রিলায়েন্স গোষ্ঠী। সূত্রের খবর, এই চুক্তির ফলে ট্রাম্পের সংস্থার রোজগার বহুগুণ বেড়ে যাবে। অর্থাৎ ২০২৩ সালের তুলনায় এই সংস্থার আয় প্রায় পাঁচগুণ বেড়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। রিলায়েন্সের অধীনস্থ একটি শাখা সংস্থার মাধ্যমে এই প্রকল্পটি রূপায়িত হচ্ছে। ট্রাম্প ব্র্যান্ডের অধীনে অভিজাত এই অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত ভারতে রিলায়েন্স গোষ্ঠীর সঙ্গে ট্রাম্পের সংস্থার সম্পর্ক নতুন নয়। ২০১৪ সাল থেকে এই দুই সংস্থার মধ্যে ব্যবসায়িক আলোচনা শুরু হয়। ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন আম্বানি। এর আগে ভারতের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্প টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। দিল্লি, পুণে, গুরুগ্রাম সহ বেশ কিছু শহরে এই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে ট্রাম্পের বাণিজ্যিক সংস্থা। তবে এবার মুম্বই প্রকল্পটি ভারতে নজির গড়তে চলেছে। কারণ, এই সংস্থা অন্য প্রকল্পগুলির থেকে আকারে অনেক বড় এবং আর্থিক বাজেটও অনেকগুণ বেশি।

এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটনে রাজনীতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ব্যবসায়িক চুক্তি প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন আমেরিকার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত লেনদেন নিয়ে স্বচ্ছতার দাবি তুলেছে তারা। যদিও এই বিতর্ক নতুন নয়। অতীতে একাধিকবার ট্রাম্পের পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি করেছিল বিরোধী শিবির। এই ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তির ফলে সেই বিতর্ক এবার নতুন মাত্রা পেল।

তবে ট্রাম্প ও আম্বানির মতো দুই গোষ্ঠীর এই গাঁটছড়াকে অন্যভাবে দেখছে কর্পোরেট দুনিয়া। তাদের মতে, এই প্রকল্পের চুক্তি শুধু শুধুমাত্র বিলাসবহুল জীবনযাত্রার প্রতীক নয়, বরং দুই দেশের ‘কর্পোরেট কূটনীতির’ও একটি নতুন নজির বলে মনে করা হচ্ছে। এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে রিয়েল এস্টেট ও হসপিটালিটির ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।