আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে টানাপোড়েনের আবহে ফের উত্তেজনা ছড়াল ‘ব্রিক্স’ জোটকে কেন্দ্র করে। সোমবার আয়োজিত ‘ব্রিক্স’-এর ভার্চুয়াল সম্মেলনের দিনেই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো।
একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ‘ব্রিক্স’ জোটকে সরাসরি আক্রমণ করে নাভারো বলেন, ‘এই জোটের দেশগুলি যেন ভ্যাম্পায়ার, আমাদের রক্ত শুষে নিচ্ছে। তারা নিজেদের পণ্য আমেরিকার বাজারে অন্যায্যভাবে বিক্রি করে চলেছে। আমেরিকার বাজার না থাকলে, এদের কেউই টিকবে না।’
Advertisement
এখানেই থামেননি তিনি। আন্তর্জাতিক এই জোটের দেশগুলিকে লক্ষ্য করে নাভারোর কটাক্ষ, ‘আমি বুঝি না ব্রিক্স কীভাবে একত্রিত হয়েছে। ইতিহাসে এরা একে অপরকে ঘৃণা করেছে। এদের মধ্যে কোনও প্রকৃত ঐক্য নেই।’ এমনকি এই জোট বেশি দিন টিকবে না বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তিনি।
Advertisement
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। ভারতের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকে বাণিজ্যে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার পক্ষে জোর সওয়াল করেন জয়শঙ্কর। তিনি স্পষ্ট করেন, বাণিজ্যের বাইরের বিষয়কে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে টেনে আনা অনুচিত। যদিও শি জিনপিং তাঁর বক্তব্যে পরোক্ষভাবে আমেরিকার বাণিজ্যনীতির সমালোচনা করেন এবং ‘ব্রিক্স’-কে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও ব্রাজিলে আয়োজিত ‘ব্রিক্স’ সম্মেলনের সময় ট্রাম্প এই জোটকে ‘আমেরিকাবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই আক্রমণাত্মক অবস্থান শুধু বাণিজ্যিক নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন আধিপত্য ধরে রাখার কৌশলের অংশ। তবে ব্রিক্স জোটের সদস্য দেশগুলি যদি একত্রে এগিয়ে চলে, তা হলে এই ধরনের চাপের মোকাবিলা করাও সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে।
Advertisement



