‘শত্রু’ দেশের নেতার সঙ্গে গোপন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর গুরুতর কূটনৈতিক বিতর্কের মুখে পড়ে পদচ্যুত হলেন তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতোঙ্গটার্ন শিনাবাত্রা। শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায়ে তাঁকে বরখাস্ত করল সে দেশের সাংবিধানিক আদালত। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ‘পান্না ত্রিভুজ’ অঞ্চলের দখলদারি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল চাপানউতোর। চলতি বছরের শুরুতে দুই দেশের সীমান্তে কয়েক দফা সেনা সংঘর্ষ, ড্রোন ও বিমান হামলার ফলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
এই আবহেই গত জুন মাসে একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। সেখানে শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রী শিনাবাত্রা কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সেনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে সীমান্তবিরোধ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। ফাঁস হওয়া ওই ফোন কল ঘিরে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। ওই কথোপকথনে শিনাবাত্রা হুন সেনকে ‘আঙ্কল’ বলে সম্বোধন করতে এবং তাঁকে সহায়তার আশ্বাস দিতে শোনা যায়। এমনকি, নিজের দেশের সেনাবাহিনীর কৌশল নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি।
Advertisement
এই ঘটনা সামনে আসতেই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রবল চাপের মুখে পড়েন শিনাবাত্রা। বিরোধী দল তো বটেই, এমনকি তাঁর নিজের দল ও জোটের একাংশও শিনাবাত্রার বিরুদ্ধে সরব হয়। বিষয়টি গড়ায় সাংবিধানিক আদালতে। গত জুলাই মাসে আদালত তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল। এরপর শুক্রবার চূড়ান্ত রায়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা প্রশ্নে গুরুতর দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আর শিনাবাত্রাকে বহাল রাখা সম্ভব নয়।
Advertisement
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকারের দায়িত্ব সর্বোচ্চ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আচরণে তা বিঘ্নিত হয়েছে।’ বিপাকে পড়ে আগেই জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছিলেন শিনাবাত্রা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় তাইল্যান্ডের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রসঙ্গত, শিনাবাত্রা থাই রাজনীতির এক বিতর্কিত ও আলোচিত মুখ। এই ঘটনার জেরে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যে দলীয় মহলে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
Advertisement



