লাহোর নয় বলুন লবপুরি

Written by SNS February 21, 2024 4:15 pm

প্রতিবেশী দেশের এই বিখ্যাত শহরের নাম সকলেই হয়তো এক বা একাধিকবার শুনেছেন৷ যদিও এখন পাকিস্তান বললেই মাথায় ঘোরে জঙ্গী কার্যকলাপ, মূল্যবৃদ্ধির মারে হত পাক জনগণ৷ তবে যদি আপনি ভ্রমন পিপাসুদের দৃষ্টি দিয়ে দেখেন তবে পাকিস্তানের লাহোর কিন্ত মসজিদ গুরুদ্বার হোক কিংবা কাওয়ালি সংগীত অথবা জিভে জল আনা খাবার, খ্যাতি বিশ্বজোড়া৷ লাহোর হল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী এবং করাচির পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর৷ সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম শহর৷ ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তানের বিভক্তির সময় এই শহরটি পাকিস্তান সীমান্তে চলে যায়৷ কিন্ত্ত এই শহরের সঙ্গে অনেক ভারতীয়েরই আত্মীক ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে৷ দেশের বহু সাধারণ মানুষ তো বটেই, বলিউড থেকে শুরু করে ভারতের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং রাজনীতির বহু প্রখ্যাত মানুষ হয় এই লাহোর শহরে জন্মেছিলেন কিংবা তাঁদের পূর্বপুরুষরা এই শহরেই থাকতেন৷
এতকিছু তো জানলেন কিন্তু এবার যা জানাব তা জানার পর অবাক না হয়ে থাকতে পারবেন না৷ এই বিখ্যাত শহরটির প্রথম বাসিন্দার নাম বললেই আকাশ থেকে পড়বেন৷ যদি না জানেন, তাহলে জানাই বলি যে, লাহোরে বসতি স্থাপন করেছিলেন ভগবান শ্রী রামের পুত্র লব৷ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুসারে, লাহোর নামটি এসেছে লবপুরী থেকে এবং এই শহর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রী রামের পুত্র লব৷ কথিত আছে যে, ভগবান রাম যখন বানপ্রস্থে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন রামানুজ ভরতের বারণ করা সত্ত্বেও, তিনি তাঁর পুত্র লব ও কুশের কাছে তাঁর রাজ্য হস্তান্তর করেছিলেন৷ ভগবান শ্রী রাম কুশকে দক্ষিণ কোশল, কুশস্থলী (কুশাবতী) রাজ্য ও অযোধ্যার দায়িত্ব দেন এবং পঞ্জাব দিয়ে যান লবকে৷ পঞ্জাব প্রদেশে লব তাঁর লবপুরীকে তাঁর রাজধানী বলে ঘোষণা করেন৷ এই লবপুরীই নাকি আজ লাহোর নামে বিখ্যাত৷ যাইহোক, মহর্ষি বাল্মীকির রামায়ণে অবশ্যে এর কোনও উল্লেখ পাবেন না৷
পাকিস্তানে লবের নামে একটি মন্দিরও রয়েছে, নাম লব মন্দির৷  এই মন্দিরটি লাহোর দুর্গের ভিতরে অবস্থিত৷ কথিত আছে যে, এই মন্দিরটি যে সময়ে নির্মিত হয়েছিল, তখন পঞ্জাবে ছিল শিখদের সাম্রাজ্য৷ যাইহোক, এই মন্দিরটি আজ খালি পডে় আছে এবং এটির যত্ন নেওয়ার কেউ নেই৷ কুশাবতী, যা লবের ভাই কুশ দ্বারা শাসিত হত, আজ তা পঞ্জাবের কাসুর জেলা হিসেবে পরিচিত৷ লাহোর আর্য সমাজের দুর্গহিন্দু, মুঘল, শিখ, পাঠান এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মিশ্র সংস্কৃতির প্রভাব লাহোরে রয়েছে স্পষ্ট৷ এক সময় এটি ছিল আর্য সমাজের দুর্গ৷
পাকিস্তানের কাসুর শহর সম্পর্কে বলা যায় যে, এর নাম কুশের নামে রাখা হয়েছে৷ এই শহরটি লাহোর থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ ইতিহাস অনুসারে, এই শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৫২৫ সাল লাগাদ৷ কাসুর শহরটি সিন্ধু উপত্যকার সময় অস্তিত্ব লাভ করেছিল৷ লাহোর শহরটি নাকি প্রায় ৪ হাজার বছরের পুরনো৷ আরব আগ্রাসনের আগে অনেক বড় বড় হিন্দু ও বৌদ্ধ শাসক এখানে ছিলেন৷ জানা যায় যে, টিব্বি বাজার লাহোরের একটি জনবহুল এলাকা৷ এই স্থানের মাঝখানে একটি প্রাচীন শিব মন্দিরও রয়েছে৷ যাকে টিব্বিওয়ালা শিবালয় বলা হয়৷