• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

শুল্ক ফেরতের শঙ্কা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অপেক্ষায় আমেরিকা

একাধিক আধিকারিক বলেছেন, আদালত যদি রায় দেয় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে, তাহলে শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বিভিন্ন দেশের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা শুল্ক যদি আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট বেআইনি ঘোষণা করে, তবে সেই শুল্ক বাবদ আদায় করা অর্থের অর্ধেক ফেরত দিতে হতে পারে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট। তাঁর মতে, আদালতের এমন রায় এলে আমেরিকার অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা লাগবে। তবে সেই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথে হাঁটার কথাও ভাবছে হোয়াইট হাউস। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যদি আমাদের বিপক্ষে যায়, তাহলে প্রচুর টাকাই ফেরত দিতে হবে। সেটা অর্থনীতির পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু আদালতের নির্দেশ মানতেই হবে।’

বিষয়টি ঘিরে প্রশাসনিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক মহল। কারণ, নিউ ইয়র্কের একটি নিম্ন আদালত কিছু দিন আগেই জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশের উপরে ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক বেআইনি। যদিও সেই রায়ে এখনও শুল্ক আদায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি হয়নি। আদালত আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে। এরই প্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে।

Advertisement

মার্কিন প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন, আদালত যদি রায় দেয় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে, তাহলে শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে কোনও ‘জরুরি অবস্থা’ দেখিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেটও এর আগে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় যদি প্রশাসনের বিরুদ্ধে যায়, তবে শুল্ক আরোপের কাজ অন্যান্য আইনসঙ্গত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে করাতে হতে পারে। তবে তার ফলে প্রেসিডেন্টের প্রতিপত্তিতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দেবে।’

Advertisement

ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলির উপর শুল্ক চাপিয়ে এসেছে, তা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক রয়েছে। শুল্ক আরোপে ট্রাম্প ব্যবহার করেছিলেন আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন। তাঁর যুক্তি ছিল, মার্কিন অর্থনীতিতে বিদেশি বাণিজ্য ঘাটতি ‘জরুরি অবস্থা’ তৈরি করেছে, যার মোকাবিলায় পাল্টা শুল্ক আরোপ প্রয়োজন।

কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই ‘জরুরি অবস্থা’র যুক্তি একেবারেই যুক্তিসঙ্গত নয় এবং আইন প্রয়োগের প্রক্রিয়াও যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। এই মুহূর্তে ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায়। তবে আদালতের রায় বিপক্ষে গেলে, প্রশাসনের কাছে শুল্ক নিয়ে জট কাটাতে বিকল্প পথ খোলা থাকবে কি না, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাইছে না অর্থ দপ্তর।

Advertisement