ইউক্রেনের রাশিয়ার হামলা, রাশিয়ার পাশে চিন, ইউক্রেনের পাশে আমেরিকা

রুশ চক্রব্যূহে ইউক্রেন তিনদিক থেকে ঘিরে হামলা চালাচ্ছে পুতিন বাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনী একই কায়দায় হামলা চালিয়েছিল মস্কোয়।

Written by SNS Moscow | February 25, 2022 12:01 pm

রুশ চক্রব্যূহে ইউক্রেন তিনদিক থেকে ঘিরে হামলা চালাচ্ছে পুতিন বাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনী একই কায়দায় হামলা চালিয়েছিল মস্কোয়। এ যেন সেই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি!

রাশিয়ার যুদ্ধ ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যেই তছনছ ইউক্রেন। ইতিমধ্যে প্রাণ গিয়েছে ১০ নিরীহ নাগরিকের। মৃত্যু হয়েছে ৪০ সেনা জওয়ানেরও। জখম বহু।

বৃহস্পতিবার সকালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার পরই আকাশ পথে ইউক্রেনের একের পর এক শহরে চলছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যুদ্ধ বিমান থেকে ফেলা হচ্ছে শক্তিশালী বোমাও।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার পদাতিক বাহিনীও। এমনকী, আজাকিভ বন্দরেও হামলা হয়েছে।

মনে করা হচ্ছে, খারকভ শহর এবং আজাকিভ বন্দরে লাগাতার বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১০ নাগরিকের। ভেঙে পড়েছে একের পর এক বাড়িঘর।

সাধারণ নাগরিক নয়, রাশিয়ার ছোড়া গোলাতে ক্রেমলিন সীমান্তে প্রাণহানি হয়েছে ৪০ সেনারও। ইউক্রেন সেনার তরফে মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে লুহানস্কের দু’টি শহর আত্মসমর্পণ করেছে বলে খবর। ইতিমধ্যে ২৩টি প্রদেশে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শহরে শহরে চক্কর কাটছে রুশ যুদ্ধবিমান।

নামছে প্যারাট্রুপাররা তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে ইউক্রেনকে সবমিলিয়ে সেই দেশজুড়ে বারুদের গন্ধ। আতঙ্কে কাঁপছেন নাগরিকরা।

বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অর্থাৎ কার্যত ইউক্রেন দখলের পথেই হাঁটল মস্কো। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই খবর।

রাশিয়ার এই চরম পদক্ষেপে কার্যত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের উস্কা বাজিয়ে দিল বলেই মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহল। যার বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা বিশ্বে।

আকাশপথে ইউক্রেনের একের পর এক শহরে চলছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। যুদ্ধ বিমান থেকে ফেলা হচ্ছে শক্তিশালী বোমাও।

গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে।

এই যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষেই বা কে? ইউক্রেনকেই বা কোন কোন দেশ সমর্থন করছে? রাশিয়া-ইউক্রেন জটিলতা নিয়ে প্রথম থেকেই আমেরিকা সরব ছিল।

এই নিয়ে মস্কোর কড়া সমালোচনা করেছিল ওয়াশিংটন। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর সমালোচনা করেছেন।

সেই সঙ্গে বলেছেন, এই পদক্ষেপ মৃত্যুমিছিল ডেকে আনবে ইউক্রেনে। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ চিনও এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে সমর্থন করছে।

গত দু’দশক ধরে রাশিয়া এবং চিনের সম্পর্ক ভালো। এই দুই দেশই অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক দিয়ে একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত।

এমনকি মহাকাশ গবেষণাতেও বহুদিন ধরে জোট বেঁধে কাজ করছে এই দুই দেশ।

তাই এই পরিস্থিতিতে চিন, রাশিয়াকে সমর্থন না করলে একটু অবাকই হত অন্য দেশগুলি। রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে উত্তর কোরিয়াও।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পরে ২০০৪ সালে আমেরিকা এই দেশগুলিকে ন্যাটো’র অন্তর্ভুক্ত করে।

রাশিয়ার একদম কাছে থাকবে এই দেশগুলি ন্যাটো’র অন্তর্গত হলেও তাদের পক্ষে রাশিয়ার বিপক্ষে যাওয়া বেশ কঠিন।

তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি সামলাতে ন্যাটো সেনা রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়াতে মোতায়েন করা আছে।

উল্লেখ্য যে, ন্যাটো’র ৩০টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশের অবস্থানই রাশিয়ার কাছাকাছি।

আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের (ন্যাটো) ৩০টি দেশ আগে থেকেই রাশিয়ার আক্রমণ রুখতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছিল। কিন্তু উভয়সংকটে রয়েছে রাশিয়া সীমান্তে থাকা জোটের দেশগুলি।

বুলগেরিয়া, এস্টোনিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়ার মতো রাশিয়া সীমান্তের দেশগুলির উপর সামরিক জোটসঙ্গী হিসেবে একদা রাশিয়ার প্রভাব ছিল।

রাশিয়ার হামলা মেনে নিতে পারছে না আমেরিকা। এর আগেও এই নিয়ে রাশিয়াকে সতর্ক করেছিল আমেরিকা। তবে আমেরিকাও যে বসে থাকবে না, তা জো বাইডেনের কথাতেই স্পষ্ট।