ইস্তানবুলে পাঁচ দিন টানা বৈঠকের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। কাতার এবং তুরস্ক— এই দুই বন্ধুদেশের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। পাক–আফগান সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই ফলাফলকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত তুরস্কের ইস্তানবুলে শান্তি–আলোচনার বৈঠক চলে। মাঝপথে তীব্র মতানৈক্যের জেরে আলোচনার গতি একবার থমকে গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার রাতেই তুরস্ক বিবৃতি জারি করে জানায়, ‘দু’পক্ষ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে সম্মত হয়েছে। এখন যাচাই এবং পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া চলবে। কোনও পক্ষ শর্ত ভঙ্গ করলে তার জন্য জরিমানা নির্ধারিত থাকবে।’
Advertisement
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তালিবান সরকারের মন্ত্রী সিরাজউদ্দীন হাক্কানি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পাকিস্তানের কিছু ব্যক্তি আগুন নিয়ে খেলছেন। তাঁরা যুদ্ধ নিয়ে খেলছেন।’ তিনি আরও জানান, আফগানিস্তান সংঘর্ষ চায় না। তবে দেশের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
Advertisement
তালিবানের অভিযোগ, শান্তি–আলোচনার মাঝপথে ভেস্তে যাওয়ার মূল কারণ ছিল পাকিস্তানের ‘অনৈতিক’ এবং ‘অযৌক্তিক’ দাবি। সেই দাবি থেকে সরে আসার পরই আলোচনায় নতুন অগ্রগতি আসে। যদিও পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
আগামী ৬ নভেম্বর আবার ইস্তানবুলেই বসবে পরবর্তী বৈঠক। সেখানে যুদ্ধবিরতির শর্তগুলি কার্যকর করার পদ্ধতি এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর সীমান্ত সন্ত্রাসের অভিযোগে কাবুলে আক্রমণ চালায় পাকিস্তান। পালটা হামলা করে আফগানিস্তানও। সীমান্ত উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। পরে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও দোহা–আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তান ফের হামলা চালায়, যাতে মৃত্যু হয় তিন জন আফগান ক্রিকেটারের। সেই পটভূমিতেই ইস্তানবুলের এই শান্তি–সমঝোতা দুই দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
Advertisement



