টানা ভারী বৃষ্টিতে নেপালে হিমালয়ের পাদদেশে আটকে পড়েছেন কয়েকশো পর্যটক। পর্বতাঞ্চলের আবহাওয়া আচমকা খারাপ হয়ে যাওয়ায় একের পর এক উড়ান বাতিল হয়েছে। ফলে লুকলা, পোখরা ও মানাংয়ের মতো জনপ্রিয় পাহাড়ি এলাকাগুলিতে আটকে পড়েছেন দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক।
জানা গিয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে লুকলার তেনজিং-হিলারি বিমানবন্দরে টানা তিন দিন ধরে উড়ান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। একে অবিরাম ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে মেঘলা আকাশ এবং কুয়াশার জেরে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কমে গিয়েছে।
Advertisement
নেপালের পর্যটন দপ্তর সূত্রে খবর, হিমালয়ের পাহাড়ি পথগুলিতে গত দু’দিন ধরে অনবরত বর্ষণ চলছে। কুয়াশা ও মেঘে ঢেকে রয়েছে আকাশ। দৃশ্যমানতা এতটাই কম যে, হেলিকপ্টার পর্যন্ত নামানো সম্ভব হয়নি। বহু পর্যটক স্থানীয় লজ, ট্রেকিং বেস ক্যাম্প ও ছোট পাহাড়ি অতিথিশালায় আটকে রয়েছেন। কারও কারও মতে, ‘হঠাৎ আবহাওয়া বদলে যাওয়ায় ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেল। যোগাযোগও ঠিক মতো করা যাচ্ছে না।’
Advertisement
প্রসঙ্গত, লুকলা মাউন্ট এভারেস্ট-সহ এই অঞ্চলের একাধিক শৃঙ্গের প্রবেশদ্বার। ফলে নেপালের বেশির ভাগ পার্বত্য এলাকায় যেতে পর্যটকদের লুকলা হয়েই যেতে হয়। তাই বিমান বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
উড়ান বাতিলের ফলে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরেও দেখা দিয়েছে ভিড়। অনেকে টিকিট ফেরানোর জন্য লাইন দিচ্ছেন। কেউ আবার নতুন সময়ে উড়ানের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘আবহাওয়া স্বাভাবিক না হলে কোনও ঝুঁকি নিয়ে বিমান ছাড়া হবে না। পর্যটকদের নিরাপত্তাই প্রধান বিবেচনা।’
এদিকে হিমালয় ঘেঁষা পাহাড়ি রাস্তাগুলিতেও কিছু এলাকায় ধস নেমেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। ফলে স্থলপথে নামা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ অপ্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ পথে না বেরোন।
পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের প্রাথমিক অনুমান, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
হিমালয়ের কোলে আটকে পড়া কয়েকশো মানুষের এই দুশ্চিন্তা ও প্রতীক্ষা কত সময়ে শেষ হবে, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা পর্যটনমহল।
Advertisement



