গত ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। ছিনতাই, রাহাজানি, লুটপাট এবং তোলাবাজির খবর যে বেড়েছে, তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এই বিশৃঙ্খলাকে ২০২৫ সালেও যে খুব নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এব্যাপারে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।
একদিকে যেমন প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা বেড়েছে, তেমনই অন্যদিকে একধরনের উচ্ছৃঙ্খল জনতার উত্থান ঘটেছে। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে যে, ২০২৪ সালেও একধরনের বিশৃঙ্খলতা থাকলেও শৃঙ্খলাও ছিল যথেষ্ট। এখন সেই শৃঙ্খলাবদ্ধ পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাটা যথেষ্ট কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে, শৃঙ্খলার নামে এক একজনের বিরুদ্ধে বহু মামলা দায়ের করা হচ্ছে বা কেউ কোনও হত্যার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে ক্রমশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। এই অনভিপ্রেত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসাটা বাংলাদেশের পক্ষে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
Advertisement
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে তোলাবাজি, এমনকি লুঠপাটের ঘটনা বেড়েছে, সেব্যাপারেও খুব কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। রাস্তাঘাটেও ছিনতাই এবং ছুরি দিয়ে কোপ মারার ঘটনা বহুগুণ বেড়েছে। ফলে সাধারণ পথযাত্রীদের চলাফেরাও আগের মতো নিরাপদ নয়। একসময় যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ আনতো, তাঁরাই এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তাঁদের অনেকেই তোলাবাজিতেও মদত দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের দলকে আরও মজবুত করতে চাইছেন। এই ধরনের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করা যে খুবই কঠিন, তা মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের মধ্যেও রাজনীতি করার প্রবণতা বেড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Advertisement
Advertisement



