• facebook
  • twitter
Thursday, 21 August, 2025

‘ভারতের আপত্তি’ সত্ত্বেও আইএমএফের পর পাকিস্তানের সাহায্যে এগিয়ে এল এডিবি, মঞ্জুর ছ’হাজার কোটি টাকার ঋণ

ফিলিপিন্সে এই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সদর দপ্তর রয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

ভারতের আপত্তি উড়িয়ে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার বা আইএমএফ-এর পর এবার পাকিস্তানের সাহায্যার্থে এগিয়ে এল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক বা এডিবি। প্রায় ৮০ কোটি ডলার ঋণ পাকিস্তানের জন্য মঞ্জুর করেছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ছ’হাজার কোটি টাকা।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব জোরদার করা এবং সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার জন্য এই ঋণ মঞ্জুর করেছে এডিবি। পাকিস্তানকে এডিবি-র এই অর্থসাহায্য সে দেশের শুল্ক ব্যবস্থার উন্নতি, রাজস্ব বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতাকে ত্বরান্বিত করবে বলে মত অনেকের। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে এই ঋণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তা সত্ত্বেও এডিবি এই ঋণ মঞ্জুর করেছে।

প্রসঙ্গত পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ ভারতীয়ের মৃত্যু ও তার প্রত্যাঘাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জেরে ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেই আবহে ভারত সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানকে এই ধরনের আর্থিক সাহায্যের বিরোধিতা করে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। নয়াদিল্লির স্পষ্ট বক্তব্য, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সাহায্যের টাকা দেশের উন্নয়নের কাজে না লাগিয়ে সামরিক খাতে ব্যয় করবে। আইএমএফ-এর ঋণের ক্ষেত্রেও ওই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সূত্রের খবর, এবার পাকিস্তানকে এডিবি-র ঋণের ক্ষেত্রেও এই ‘অপব্যবহারের’ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে নয়াদিল্লির তরফে। তুলে ধরা হয়েছে পাক অর্থনীতির দুর্বলতাও। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের শুল্ক থেকে সংগৃহীত রাজস্ব ছিল জিডিপির ১৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছিল জিডিপির ৯.২ শতাংশ। তবে ফের এডিবি-র ঋণ পাচ্ছে পাকিস্তান।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, এডিবি একটি আঞ্চলিক উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্ক, যা এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে থাকে। ফিলিপিন্সে এই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সদর দপ্তর রয়েছে। এ ছাড়াও এডিবি-র মোট ৩১টি দপ্তর রয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। এডিবি-র পাকিস্তানের ডিরেক্টর এমা ফান বলেছেন, ‘পাক সরকারের নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে এডিবি-র কর্মসূচি। অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে পাকিস্তান সামগ্রিকভাবে উন্নতি করেছে। তাই এই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।’

সম্প্রতি পাক বিদেশমন্ত্রীর পরামর্শদাতা খুররম শেহজ়াদ সামাজিক মাধ্যমে এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৮০ কোটি ডলারের এই আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে ৩০ কোটি ডলার ‘নীতি ভিত্তিক’ অর্থাৎ পলিসি বেস্‌ড লোন বা পিবিএল এবং বাকি ৫০ কোটি ডলার ‘প্রোগ্রাম ভিত্তিক’ বা প্রোগ্রাম বেস্‌ড গ্যারান্টি বা পিবিজি হিসেবে ধার্য হয়েছে। এডিবি-র সম্পদ সংগ্রহ সংস্কার কর্মসূচি অর্থাৎ রিসোর্স মোবিলাইজ়েশন রিফর্ম প্রোগ্রাম-এর অধীনে এই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করেছিল। ইতিমধ্যে যার প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পৌঁছে গিয়েছে ইসলামাবাদে। পহেলগামে জঙ্গি হামলা ও পাকিস্তানে ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরবর্তী সময়ে দুই দেশের সংঘাতের আবহে আইএমএফ-এর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছিল, যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল।

News Hub