সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল বাংলাদেশ হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মুহাম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মুহাম্মদ আলি রেজার বেঞ্চে চিন্ময়ের জামিনের মামলার শুনানি ছিল। গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করেছিল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ। তারপর থেকে তিনি জেলেই রয়েছেন। প্রথমে নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। সেই আবেদন একাধিকবার খারিজ হয়ে যায়। এরপর বাংলাদেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইউনূস। সেখানে আবেদন জানিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি।
মঙ্গলবারের শুনানিতে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ করলেও এবার মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের হলফনামা তলব করেছে বাংলাদেশ হাইকোর্ট। কেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, চিন্ময়কৃষ্ণের নামে দেশদ্রোহিতা ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। তদন্ত চলায় এখনই তাঁকে জামিন দেওয়া সম্ভব নয়। সন্ন্যাসীর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজন। সেই আর্জি অবশ্য গৃহীত হয়নি।
এদিন আদালতে চিন্ময়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্বকুমার ভট্টাচার্য, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর হালদার। সরকার পক্ষের তরফে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। আইনজীবী অপূর্বকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ওই মামলায় আবেদনকারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি বাংলাদেশ হিন্দু ঐক্য মহাজোটের আহ্বায়ক চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। হিন্দু মহাজোটের এই নেতার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার ধারায় মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাঁর ডাকা সভায় জাতীয় পতাকার উপরে ইসকনের পতাকা টাঙানো হয়েছিল বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বড় বড় জঙ্গি নেতাদের জামিন মঞ্জুর করেছে ‘ইউনূসের আদালত’। কিন্তু সেই আদালতেই বার বার সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।