পাকিস্তানে মহামারির আকার নিচ্ছে এইডস,সিন্ধে আক্রান্ত অন্তত ৪৩৭ শিশু

মাসখানেক আগেও এইচআইভির বিষয়ে সচেতন ছিলেন না দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাসিন্দা।।এখন সিন্ধু প্রদেশের সর্বত্র,বিশেষত রাতােদেরাে শহরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে উপচে পড়া ভিড়।

Written by SNS Islamabad | May 22, 2019 9:42 pm

এইডস রোগ মহামারির রূপ নিচ্ছে পাকিস্তানে (ছবি-Getty Images)

মাসখানেক আগেও এইচআইভির বিষয়ে সচেতন ছিলেন না দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাসিন্দা।এক মাসের মধ্যেই চালচিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে।এখন সিন্ধু প্রদেশের সর্বত্র,বিশেষত রাতােদেরাে শহরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে উপচে পড়া ভিড়।কেউ নিজের এইচআইভি-র সংক্রমণের খবর নিতে গিয়েছেন তাে অধিকাংশই গিয়েছেন সন্তানের ভবিষ্যৎ জানতে।আর হবে নাই বা কেন!বর্তমানে কেবল সিন্ধ  প্রদেশে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। সবমিলিয়ে , পাকিস্তানে মহামারির আকার নিতে চলেছে এইচআইভি।

সিন্ধের সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন ,শুক্রবার পর্যন্ত সিন্ধু প্রদেশে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে,যার মধ্যে রয়েছে কমপক্ষে ৪৩৭টি শিশু।এদের মধ্যে আবার ৬০ শতাংশের বয়স ৫ বছরের নীচে।এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাতােদেরাে শহরের চিকিৎসক ইমরান আকবর।তিনি জানান,ফতেমা বেগম নামে ১৬ মাসের এক শিশুর প্রথম এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।সে বহুদিন ধরে জ্বর ,সর্দি কাশিতে ভুগছিল।বহু চিকিৎসা করেও সুস্থ না হওয়ায় তার এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়।তখনই জানা যায় , ফতেমাও এইচআইভিতে আক্রান্ত।১৬ মাসের শিশুর এইচআইভি -তে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতে চিকিৎসক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদেরও চোখ কপালে উঠেছিল।এরপর ফতেমার মতােই উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসা অন্যান্য শিশুদেরও এইচআইভি পরীক্ষা করা হয় এবং অধিকাংশের এইচআইভি-তে আক্রান্ত হওয়ার রিপাের্ট প্রকাশ্যে আসে।হঠাৎ করে সিন্ধে কীভাবে এতজন এইচআইভি-তে আক্রান্ত হলেন,তা এখনও স্পষ্ট নয়।তবে সিরিঞ্জ সংক্রমণ থেকেই এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে বলে প্রশাসনের প্রাথমিক অনুমান।

‘ সিন্ধ এইডস কন্ট্রোল প্রােগ্রাম’ এর অধিকর্তা সিকন্দর মেননও জানিয়েছেন ,সিন্ধের বহু চিকিৎসকই হাতুড়ে।এখনও ব্যয় কমাতে একই সিরিঞ্জে  একাধিক জনকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।এছাড়া অস্বাস্থ্যকর এবং একই সরঞ্জাম দিয়ে বহুজনের নাক কানের ভিতরের চিকিৎসাও করা হয়। তার ফলেই এইচআইভি – র জীবাণু  শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের মধ্যে হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে বলে মেননের দাবি।ইতিমধ্যে রাতােদেদোর এক শিশু চিকিৎসককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।ওই চিকিৎসক কমপক্ষে ১০টি পরিবারের শিশুদের একই সিরিঞ্জে টীকা দিয়েছেন বলে অভিযােগ।তবে প্রশাসন বা সিন্ধ এইডস কন্ট্রোল প্রােগ্রাম – এর আধিকারিকরা এই সমস্ত কিছু জানার পরেও এতদিন কেন এই বিষয়ে নীরব ছিল,তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রসঙ্গত , বছর দুয়েক আগে ২০১৭ সালেও পাকিস্তানে এভাবে মহামারির আকার নিতে শুরু করেছিল এইডস।সেবার ২০ হাজার এইডস রােগীর সন্ধান মিলেছিল।বর্তমানে এইচআইভি সংক্রমণে পাকিস্তান বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়।