শীতকালে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা অনেক বেশি বেড়ে যায়। যন্ত্রণায় থাকতে না পেরে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হয় অনেককে। শীতকালে মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় স্ক্যাল্প, ঘাড়ের রক্তনালীগুলি দ্রুত সঙ্কুচিত হতে শুরু করে। এর ফলে ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুপথেও উত্তেজনা ছড়ায়। সেই কারণে তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হয়। শীতকালে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বেশ কয়েকটি উপায় বলে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, হঠাৎ ঠান্ডা হাওয়া লাগলেও মাথার যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। একবার গরম থেকে ঠান্ডা, আবার ঠান্ডা থেকে গরমে যাতায়াত করলেও ভাস্কুলার সিস্টেমের উপর প্রভাব পড়ে। শীতকালে ঘরবন্দি হয়ে বসে থাকলে শারীরিক সক্রিয়তা কমে যায়। সেই থেকেও যন্ত্রণা বেশি অনুভূত হতে পারে। গায়ে রোদ পড়লে সেরোটোনিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। এর ফলে মেজাজ ভালো থাকে। কষ্ট-যন্ত্রণা তেমন অনুভূত হয় না। পাশাপাশি ঘুমও এসে যায় তাড়াতাড়ি।
শীতকালে গায়ে রোদ কম পড়লে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বেশি অনুভূত হয়। গায়ে রোগ কম পড়ার অর্থ হল প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি–এর জোগান শরীরে কমে যায়। শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়ায় নিদ্রাচক্রের উপর প্রভাব পড়ে। এর প্রভাবেও মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বেড়ে যেতে পারে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপেও হেরফের ঘটে। বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কমে গেলে সাইনাসের মতো বাতাসপূর্ণ প্রকোষ্ঠগুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এর ফলে স্নায়ুতে উত্তেজনা ছড়ায়। রক্তনালীতে সামান্য হেরফের ঘটলেও এমনটা হয়।
শীতকালে ঘরবন্দি হয়ে থাকার সময় অত্যধিক ক্যাফিন যুক্ত পানীয় অনেকে পান করে ফেলেন। সেই তুলনায় জল খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হয়। এরফলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা আরও বেশি অনুভূত হয়। বর্তমানে ঘরে বসে থাকা মানেই দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের উপর নজর বেশি থাকে। এতে চোখের উপর চাপ পড়ে। ফলে বাড়ে মাইগ্রেন। তাই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শীতকালে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে হলে মাথা, ঘাড় এবং কান গরম রাখতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। তেষ্টা না পেলেও জল পান করতে হবে। এছাড়াও ঘুমের সঙ্গে আপস করা যাবে না। সময়ে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। শীতে বেশি করে বাড়ির বাইরে থাকতে হবে যাতে গায়ে রোদ লাগে।
Advertisement