দাদা কেন কাঠগড়ায় ? সব জেনেও কেন নিশ্চুপ বিরাট? বিসিসিআইয়ের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা

সকলেই আঙুল তুলছেন বিসিসিম্বাইয়ে সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির দিকে। কিন্তু কেন? প্রশ্নটা এখন দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। দাদা কেন কাঠগোড়ায়।

Written by সৌরেন দত্ত Mumbai | December 13, 2021 4:19 pm

সকলেই আঙুল তুলছেন বিসিসিম্বাইয়ে সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির দিকে। কিন্তু কেন? প্রশ্নটা এখন দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। দাদা কেন কাঠগোড়ায়। আসামীর মতন তাঁকে কেন বার যার জেরা করা হবে।

তাকে কেন কৈফিয়তের ভাগীদার হতে হবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার সঙ্গে সরাসরি কথা হওয়ার পরেও কেন নিচুপ এই ব্যাপারটা নিয়ে বিরাট কোহলির মুখবন্ধ নিয়ে একটা জরানা গোটা ভারতীয় ক্রিকেটকে সে রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছে।

যেখানে বরবার আসামীর মতন কাঠগোড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে দি প্রিন্স অফ কলকাতাকে। শুধুই কি তিনি দা বলে এই সাজ? কেন এরকম হবে। বিরাট কেন সদুত্তর দেবেন না। এরকম নানান প্রশ্ন সকল দাদা ভক্তর মনে।

এই বিষয়টা তারা পুরোপুরি মেনে নিতে পারছেন না আর ব্যাপরটা পুরোপুরি না মেনে নেওয়ার মতনই কথা। যেখানে বিসিসিআইয়ের সভাপতি হওয়ার পরও সৌরভকে বারবার টেস্ট নিয়ে সকলের সামনে আসামীর মত কথা বলতে হচ্ছে। আর প্রধান অভিযুক্ত ‘বিরাট কোহলি!

পুরোপুরি কেন দাদার সমর্থকরা এই ব্যাপারটা মোটেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না বিরটকে অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার কাজটা তাঁর নয়, অন্যদিকে বিরাটের ফ্যানেরা মনে করছেন “বিরাটকে অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার পিছনে মূল কারিগর হচ্ছে সৌরভ গাঙ্গুলি।”

এই নিয়ে বিবাদ চলছে। তবে এই বিবাদকে সামলানোর জন্য সৌরভ গাঙ্গুলি নিজে থেকে পুরো ব্যাপারটাকে পরিষ্কার করে সকলের সামনে মেলে ধরতে চাইছেন।

এবং তিনি পুরো বক্তব্য সকলের সামনে তুলে ধরছেন কিন্তু আক্রমণের তীরটা পুরোপুরি তাঁকেই বিদ্ধ করছে। যেমন বিরাটের ছোটবেলার কোচ সরাসরি বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভকেই দায়ী করছেন এই ব্যাপারটার জন্য।

সবমিলিয়ে দেখতে গেলে, কাঠগোড়ায় দাঁড় করিজে দেওয়া হয়েছে সৌরভ গাঙ্গুলিকে সাক্ষী হিসাবে সৌরভ তার সবকিছু খোলসা করে বলার চেষ্টা লেও মহামান্য আদালতের কাছে তার কথা যেন কেউ মেনে নিতে পারছেন বিশেষ করে বিরাটের ছোটবেলার কোচ ও তার ভক্তরা।

এখানে সৌরভ গাঙ্গুলির ফ্যানেরাও এই ব্যাপারটার দিকে নজর রেখে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না যে এখানে পুরোপুরি দাদার হস্তক্ষেপে বা দাদার জোরের ফলেই বিরাট অধিনায়ক।

মিলিয়ে একটা টালমাটাল অবস্থা চলছে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহল। একদিনের ক্রিকেটে বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব ছাড়া নিয়ে আরও একবার মুখ খুললেন সৌরভ।

তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন বিরাটের সঙ্গে তার এই ব্যাপারটা নিয়ে কথাও হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্য দল নির্বাচনের পরে বিরাটের সঙ্গে অবশ্যই কথা হয়েছে। এর সঙ্গে কথা বলে মনে হল, কোথাও কোনও সমস্যা নেই।

সব কিছু ঠিক আছে পাশাপাশি আমরা সকলের সঙ্গে কথা বলে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলাম যে আমরা সাদা বলের ক্রিকেটে দু’জন অধিনায়ককে রাখতে চাই না। আর এটা পুরোপুরি সম্ভব নয়।

তাই আমরা রোহিতকে অধিনায়ক হিসাবে বেছে নিয়েছিলাম। একদিনের ক্রিকেটে তাই ওকে অধিনায়ক হিসাবে বাছা হয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আমরা সকই মনে করি।

এখানে আমরা ব্যক্তিগত কোন আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। গোটা ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষাতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যত সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

তাই ভুলভাল কোনও সিদ্ধান্ত নিতে আমরা পক্ষপাতী নই। তাই এমসিএ-কে বাড়তি গুরুত্ব নিতেই হবে। আমরা যা করছি ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষাতের কথা ভেবেই করছি। এই কথাটা সকলকে বুঝাতে হবে এবং মেনে নিতে হবে।

এদিকে বিরাটের ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা পুরোপুরি সৌরভ গাঙ্গুলির দিকে আঙুল তুলেছেন। কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি বিরাটের সঙ্গে কথাই বলতে পারিনি।

কারণ ওর ফোন বন্ধ। আর এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে যেকোনো মানুষ কষ্টে ও যন্ত্রণায় ফোন বন্ধ রেখে কারোর সঙ্গে কথা বলবে না, সেটা কারোর অজানা নয়। যেটা আমরা আমাদের সাধারন করে থাকি, বিরাটও সেই একই কাজ করেছে।

সব কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবে চিন্তে নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এতদিন এত সাফল্য এনে দেওয়ার পর কাউকে হঠাৎ করে তার জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া মোটেই যুক্তিপূর্ণ নয়।

যখন বিরাট নিজে থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিল সেখানে ওখানে বলা উচিত ছিল বাকি দুই ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাওয়া উচিত। সেখানে এই কাজটা না করে পুরো উল্টো সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

সত্যিই এভাবে কি কোনও দেশের ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখা যায়? আমি তো জানি না, একজন সফল অধিনায়ককে এইভাবে অপমান করা মোটেই শ্রেয় নয়। জানি না কবে বিরাটের সঙ্গে কথা বলতে পারব।

তবে আর যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেটে সকলেই নিজেকে প্রমাণ করে নেয় নিজের ব্যাটের জোরে। আশা করি বিরাট তার অপমানের জবাব তার ব্যাটকে হাতিয়ার করে নেবেই।’