কলকাতা ময়দানের ফুটবলে বেটিং চক্র চলছে। গত তিন বছর ধরে একথা নিজেই স্বীকার করেছেন আইএফএ-র সচিব অনির্বাণ দত্ত। কিন্তু বেটিং চক্রের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের ধরতে এত সময় লাগল কেন, এ প্রশ্ন উঠেছে। আর এই বেটিং চক্রের যিনি নায়ক, তাকে তো বিভিন্ন মাঠে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তাহলে কেন তার প্রতি তখনই পদক্ষেপ নেওয়া হল না? এই প্রশ্ন ময়দানকে ভাবাচ্ছে। আইএফএ-তেও মাঝেমধ্যে ওই ব্যক্তিকে দেখা গেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ফুটবলপ্রেমী হিসেবে কুন্তল চক্রবর্তী ফেসবুকে এই বেটিং চক্রের ব্যাপারে বেশ কিছু খবর প্রকাশ করেছিলেন। সেই খবর জানার পরে আইএফএ এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে।
শুধু তাই নয়, এই বেটিং চক্রের কথা জানার পরেও সেইভাবে আইএফএ-র ভূমিকা দেখতে পাওয়া যায়নি। তবে কেন টানা তিনবছর কলকাতা ময়দানে এদেরকে জায়গা দেওয়া হল? আবার একটি মাত্র ক্লাবকে শিখণ্ডি করে এই বেটিং চক্রের ব্যাপারে তদন্ত করার চেষ্টা হল না। বলা হয়ে থাকে, নিজস্ব পর্যবেক্ষকরা প্রতিদিনের রিপোর্ট দিয়ে থাকেন। সেই রিপোর্টে কি বেটিংয়ের ব্যাপারে কোনওরকম হদিশ দেওয়া হয়েছিল? মাঠে ম্যাচ কমিশনার থাকেন। তিনি কি কোনও রিপোর্ট দিয়েছেন?
Advertisement
এদিকে খিদিরপুর ক্লাবে অন্যতম কর্মকর্তা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এরকম ঘটনা কেন ঘটল, জানা নেই। অবশ্যই ক্লাবের ভাবমূর্তি অনেকটা নষ্ট হয়েছে। কিন্তু নিজে বিশ্বাস করি না এ ব্যাপারে ক্লাবের কোনও শীর্ষ কর্মকর্তা জড়িয়ে রয়েছেন। কোথা থেকে কী ঘটনা ঘটেছে, তা জানা সম্ভব নয়। বলতে দ্বিধা নেই, কলকাতা ফুটবলকে কলুষিত করার জন্য হয়তো এক শ্রেণির মানুষ বিভিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন। এই কাজকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা কলকাতা ফুটবলের ঐতিহ্যকে আঘাত করে, তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবে, দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়।
Advertisement
আবার জানা গেছে, দ্বিতীয় ডিভিশন থেকে প্রথম ডিভিশনে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রেফারি যেভাবে দুর্গাচক মিলন সংঘের বিরুদ্ধে গিয়ে রাজস্থান ক্লাবের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে ম্যাচ জিতিয়েছেন, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে আইএফএ-কে চিঠি দিয়েছেন ক্লাবের সচিব জহরলাল বারিক। জানা গেছে, তিনি আইএফএ-র সচিবের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনওরকম সহযোগিতা তিনি পাননি। আসলে ওই ম্যাচটা ড্র করতে পারলেই দুর্গাচক মিলন সংঘ প্রথম ডিভিশনে উঠতে পারত। আর রাজস্থানকে জিততেই হত। ওই খেলায় রেফারি ৬ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়ার পরেও রাজস্থান যতক্ষণ না পর্যন্ত গোল করতে পারেনি, ততক্ষণ রেফারি খেলা চালিয়ে গেছেন। রেফারি অতিরিক্ত ১১ মিনিট খেলা চালিয়ে গেছেন। আসলে কলকাতা ফুটবল ময়দানে গটআপ একটা বড় রোগ।
Advertisement



