এই প্রথমবার মহিলাদের এশিয়া কাপ হকি প্রতিযোগিতা মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করল বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘সি’-এর বাছাই পর্বের খেলায় বাংলাদেশ ২-১ গোলে মায়ানমারকে হারিয়ে দেওয়ার পরে তাদের নজর ছিল বাহরিন বনাম তুর্কমেনিস্তান ম্যাচের দিকে। সেই ম্যাচ ড্র হতেই বাংলাদেশ এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে যায়। ইতিমধ্যেই এশিয়া কাপ মহিলা হকিতে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে অস্ট্রেলিয়া, চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ।
মোট ১২টি দল মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। ইতিমধ্যেই শীর্ষ আটটি দেশ অংশ নেবে অলিম্পিক্স গেমসে। আর প্রথম ছ’টি দল খেলবে বিশ্বকাপ মহিলা হকি প্রতিযোগিতায়। তবে অলিম্পিক্স কিংবা বিশ্বকাপ এখনও অনেক দূর। এখন প্রশ্ন হল, ভারতের মেয়েরা আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কি?
মহিলাদের এশিয়ান কাপের যোগ্যতা নির্ণয় পর্বে জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে ভারত। প্রথম ম্যাচে মঙ্গোলিয়াকে ১৩-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর লেস্তেকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতের মেয়েরা। বুধবার ইরাককে হারাল ৫-০ গোলে হারিয়ে দেন ভারতের মেয়েরা। অর্থাৎ, তিন ম্যাচে ভারতের মেয়েরা ২২টি গোল করেছেন। এতগুলো গোল করার পরেও কিন্তু সঙ্গীতা বাফফোর, মনীষা কল্যাণদের এশিয়ান কাপে মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত করতে পারেননি। এখন ভারতের সামনে কাঁটা থাইল্যান্ড।
প্রথম দু’টি ম্যাচে গোল পার্থক্যের দিক দিয়ে ভারতের ব্যবধান বেশি থাকলেও, মঙ্গোলিয়াকে ১১-০ গোলে হারায় থাইল্যান্ড। এরফলে তাদেরও গোলসংখ্যা ২২। এর আগে তিমুর লেস্তেকে ৪-০ এবং ইরাককে ৭-০ গোলে হারিয়েছিল থাইল্যান্ড। সুতরাং, এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যেতে গেলে ভারতকে সোজাসাপ্টা থাইল্যান্ডকে পরাজিত করতে হবে। অন্যদিকে, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খেলা অমীমাংসিত থাকলে টাইব্রেকারে জিতে কোয়ালিফাই করারও সুযোগ থাকছে। অর্থাৎ, ৫ জুলাই জি গ্রুপে থাইল্যান্ড ম্যাচ ভারতের কাছে কার্যত ‘ফাইনাল’।
মঙ্গোলিয়াকে ১৩ গোলে হারালেও ভারত কিছুটা হলেও অনুতপ্ত। কারণ কম করে আরও চারটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। তাছাড়াও অনেকেই মঙ্গোলিয়ার ম্যাচে মনীষা কল্যাণকে বেঞ্চে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বিশ্বাস, ওই ম্যাচে মনীষা খেললে আরও অনেক বেশি ব্যবধানে জিততে পারত ভারত। আর সেটা হলে থাইল্যান্ড ম্যাচের আগে কিছুটা হলেও নিশ্চিন্তে থাকত ভারত।
অন্যদিকে, থাইল্যান্ড মহিলা দলের বর্তমান ফিফা র্যা ঙ্কিং ৪৬। ভারতের ৭০। তাই থাইল্যান্ড ম্যাচ যে অত্যন্ত কঠিন তা বলা যেতেই পারে। তবে ভারতের কাছে সুযোগ থাকবে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে মূল পর্বে পৌঁছে যাওয়ার। ভারতের নজর থাকবে গ্রেস ডাংমেই, মনীষা কল্যাণ, সন্ধ্যা রঙ্গনাথন, আশালতা দেবীদের দিকে। ২০০৩ সালে শেষবার যোগ্যতার ভিত্তিতে মহিলা এশিয়ান কাপ হকিতে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০২২ সালে আয়োজক দেশ হিসেবে এশিয়ান কাপ খেলে। এখন অপেক্ষা, থাইল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে পারেন কিনা ভারতীয় মেয়েরা।