কোটলায় রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ : সুপারওভারে দিল্লি রাসেল ও কার্তিকের প্রয়াসকে ব্যর্থ করে দিল

শনিবার কোটলায় টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬১ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও, নাইটদের মান বাঁচালো সেই ‘রাসেল পাওয়ার’।

Written by SNS March 31, 2019 6:05 pm

আঁন্দ্রে রাসেল (Photo: IANS)

দিল্লি, ৩০ মার্চ – শনিবার কোটলায় টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬১ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও, নাইটদের মান বাঁচালো সেই ‘রাসেল পাওয়ার’।সঙ্গী হিসাবে নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের ৫০ রানটা কার্যকরী ভূমিকা নিল। প্রথমদিকে নাইটদের ব্যাটিং ধস নামলেও,  সেই রাসেলই একা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন। ২৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলে দলকে যেমন ভালো জায়গায় পৌঁছে দিলেন ঠিক তেমনি চলতি আইপিএলে সর্বোচ্চ রান করার তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে এলেন। প্রথম দুটি ম্যাচে অর্ধশতরান না পেলেও, তৃতীয় ম্যাচে সেই আশাটা পূরণ করে ফেললেন। রাসেল পাওয়ার ও কার্তিকের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসের উপর ভর করে না শেষ পর্যন্ত আট উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান তোলে।

ঘরের মাঠে টানা দুটি জয় তুলে নেওয়ার পর দ্বাদশতম আইপিএলে প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচে শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। কোটলায় খেলতে নামার আগে নাইটদের শিবিরে বড় ধাক্কা যেটা হল চোটের জন্য সুনীল নারিনকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল। সুনীল নারিনের পরিবর্তে এদিন নাইটদের প্রথম একাদশে নিযুক্ত করা হয় ওপেনার নিখিল নায়েককে। তবে, এদিন নাইটরা  তিন বিদেশী কে মাঠে নামিয়েছিল। অন্যদিকে দেল্লি ক্যাপিটালস দল চেন্নাইয়ের কাছে পরাজিত হওয়ার পর ঘরের মাঠে খেলতে নেমে দলে চারটি পরিবর্তন আনা হয়। দিল্লি দলের প্রথম একাদশে নিযুক্ত করা হয় হনুমা বিহারী, হার্ষা প্যাটেল, ক্রিস মরিস ও সন্দীপ লিমিচানে। টসে জিতে শনিবার দিল্লির অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার প্রথমে নাইটদের ব্যাট করার জন্য আহ্বান জানান। দিল্লি অধিনায়ক টস জেতার পর জানান, ‘গত ম্যাচে আমরা প্রথমে বোলিং করেছিলাম। কিন্তু সেটা আমাদের পুরোপুরি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তবে, এখানে পিচ দেখে মনে হচ্ছে প্রথম ফিল্ডিং করাটাই ঠিক হবে তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের মাথায় রাখতে হবে বিপক্ষ দলে রাসেলের মতন ব্যাটসম্যান রয়েছে তিনি যেকোনো সময়ে খেলার চরিত্র পাল্টে দিতে পারেন, তাই তাকে প্রথমে থামানোটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য’। এদিকে কার্তিক বলেন, ‘দেখুন আমরা যেকোনো পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের মানিয়ে নিতে প্রস্তুত। আমরা প্রথমে ব্যাট করতে নামব সেটা কোনো বড় ফ্যাক্টর নয়, যেখানে যেমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় সেখানে সে ভাবে নিজেদের মেলে ধরতে হবে। সত্যি বলতে কি প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে সেভাবে শুরুটা করতে পারল না নাইটরা। প্রথম ম্যাচে নাইটরা ওপেনিংয়ে ক্রিস লিনের সঙ্গে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন নীতিশ রানাকে। তবে, দ্বিতীয় ম্যাচেই ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনা হয় এবং পাঠানো হয় লিনের সঙ্গে সুনীল নারিনকে। তৃতীয় ম্যাচেও আবারো নাইটদের ওপেনিংয়ে পরিবর্তন।সুনীল নারিনের পরিবর্তে দলে ঢোকা নিখিল নায়েককে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয় ক্রিস লিনের সঙ্গে। তবে, নিখিল নায়েককে যে জায়গাটা তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল, সেটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে তিনি ব্যর্থ। ব্যক্তিগত ষোলো বল খেলে সাত রান করে আউট হয়ে যান লিমিচানের বলে। এর ফলে নাইটরা শুরুতেই ষোলো রানের মধ্যে এক উইকেট হারিয়ে ফেলে। প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে সেভাবে নিজেদের শুরুটা করতে পারলো না। ক্রিস লিন তো ব্যর্থতার খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন দুটি ম্যাচে, তৃতীয় ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে রানের খরা কাটল না। এদিন তিনি আউট হয়ে গেলেন ব্যক্তিগত আঠেরো বলে কুড়ি রান করে। এরপর ফর্মে থাকা রবিন উথাপ্পা, নিতিশ রানারা প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখেন। ফর্মে থাকা রানা যে চেনা পিচে রান পাবেন সেটা সকলেই আশা করেছিলেন, কিন্তু টানা দুটি ম্যাচে অর্ধশতরান করা রানার ব্যাট থেকে এলো মাত্র এক রান। এদিকে প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ না পাওয়া শুভমান গিলকে পাঠানো হয় আঁন্দ্রে রাসেলের আগে। কিন্তু, শুভমান প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না, আউট হয়ে গেলেন মাত্র চার রান করে। মাত্র ৬১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে নাইটরা পুরোপুরি চাপের মধ্যে পড়ে যায়।

নাইটদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচেই পুরোপুরি ধসে পড়ল দিল্লি ক্যাপিটালস দলের বোলিংয়ের সামনে। তবে, শেষ দিকে রাসেলের ঝড়ো ইনিংস আঠাশ বলে ৬২ রান এবং দীনেশ কার্তিকের ৫০ রানের উপর ভর করে কলকাতা নাইট রাইডার্স নির্দিষ্ট কুড়ি ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান তোলে। পরে ব্যাট করতে নেমে দিল্লি পৃথ্বী শ’র রানে ভর করে কুড়ি ওভার শেষে রান তোলে ১৮৫। ম্যাচ টাই হয়ে যায়। পরে সুপার ওভারে দিল্লি জয় ছিনিয়ে নেয়।