ভারতীয় দল চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিমধ্যেই অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব সিরিজটা হাতে তুলে নিয়েছেন। কিন্তু পুণের অলরাউন্ডার শিবম দুবের কনকাশন পরিবর্ত হিসাবে নেমে ম্যাচ জিতিয়েছেন হর্ষিত রানা। তাঁর খেলা নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। ক্ষোভের থেকে দূরে ছিলেন না ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার।
পুণেয় হার-জিতের থেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে হর্ষিত রানার খেলা নিয়ে। অলরাউন্ডার শিবম দুবের কনকাশন পরিবর্ত হিসাবে নেমে ম্যাচ জিতিয়েছেন হর্ষিত। তাঁর খেলা নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। বাটলারের দাবি, তাঁর সঙ্গে কোনও কথা না বলেই হর্ষিতকে খেলানো হয়েছে। পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে ভারত। কী বলছে আইসিসির নিয়ম?
প্রথম ইনিংসের শেষ ওভারে হেলমেটে বল লাগে শিবমের। ক্রিকেটের নতুন নিয়মে মাথায় বল লাগলে কোনও ক্রিকেটারকে নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া যায় না। দরকার পড়লে তাঁর বদলে অন্য ক্রিকেটার নামতে পারেন। কিন্তু যে ক্রিকেটারের চোট লেগেছে তাঁর যথোপযুক্ত পরিবর্ত নামাতে হবে। অর্থাৎ, ব্যাটসম্যানের বদলে ব্যাটসম্যান, বোলারের বদলে বোলার বা অলরাউন্ডারের বদলে অলরাউন্ডার নামানো যাবে। ইংল্যান্ডের আপত্তি ঠিক এই জায়গাতেই। আইসিসির নিয়মের ১.২.৭.৩ ধারা অনুযায়ী, “ম্যা চ রেফারি কনকাশন সাব এর পরিবর্ত হিসেবে একই প্রকারের ক্রিকেটারকে নামানোরই অনুমতি দেয়। যাতে বিপক্ষ দল অতিরিক্ত সুবিধা না পায়।”
শিবম পেসার-অলরাউন্ডার। তাঁর পরিবর্তে কোনও পেসার-অলরাউন্ডারকে নামানো যেত। সেই তালিকায় ছিলেন রমনদীপ সিং। কিন্তু যে হেতু শিবম পেসার, সেই যুক্তিতেই নামানো হয় হর্ষিতকে। পরে ভারতের বোলিং কোচ মর্নি মর্কেল জানিয়েছেন, তাঁরা পরিবর্ত হিসাবে হর্ষিতের নাম দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি জভগল শ্রীনাথকে। তিনি অনুমতি দেওয়ায় হর্ষিতকে নামানো হয়। তার পরেও এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি ইংল্যান্ড। ম্যাচ চলাকালীন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারকে দেখে বোঝা যায়, কতটা বিরক্ত তিনি। এই বিষয়ে বিতর্ক বেড়েছে বাটলারের মন্তব্যে। তিনি বলেন, “এই পরিবর্ত মোটেই উপযুক্ত নয়। কেন এক জন অলরাউন্ডারের পরিবর্তে জোরে বোলার নামবে? হয় শিবমকে বলের গতি ঘণ্টায় আরও ২৫ কিলোমিটার বাড়াতে হত নয়তো হর্ষিতকে ব্যা টিংয়ে আরও উন্নতি করতে হত।” আরও যোগ করেন, “এখনও ‘পরিবর্ত’-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি হতে পারছি না।”
বাটলার আরও দাবি করেছেন, কনকাশন পরিবর্ত নেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। আমাকে কেউ জানায়নি। আমি ব্যাট করতে নামার সময় হর্ষিতকে দেখি। জানতে চাই যে ও কার বদলে নেমেছে। তখন ওরা বলে যে শিবমের পরিবর্তে নেমেছে। কিন্তু এটা তো উপযুক্ত পরিবর্ত নয়। ওরা বলে যে ম্যাচ রেফারি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু ম্যাচ রেফারি শ্রীনাথের কাছে কয়েকটা বিষয় পরিষ্কার করতে হবে আমাদের।”
আইসিসির নিয়মে অবশ্য স্পষ্ট বলা আছে যে কনকাশন পরিবর্ত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ম্যাচ রেফারি। তিনি যদি মনে করেন যে পরিবর্ত উপযুক্ত তা হলে কোনও দল তাতে আপত্তি করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে কোনও দলের সঙ্গেই ম্যাচ রেফারি আলোচনা করেন না। ফলে বাটলারের সঙ্গে শ্রীনাথের আলোচনার প্রসঙ্গই নেই।
হর্ষিত রানাকে নিয়ে বিতর্ক এমন জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে তা নিয়ে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান তৈরি হতে পারে। ক্রিকেটারদের মনোবলে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। সেই কারণেই কিভাবে এই বিতর্ক থেকে দূরে থাকা যায় তার একটা চেষ্টা চলছে।