সিএবি পরিচালিত প্রথম ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ও ভবানীপুরের খেলাকে কেন্দ্র করে একের পর এক অঘটন ঘটেই চলেছে। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত। পাঁচ ঘণ্টা খেলা বন্ধ। সিএবি’র সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলি ও সচিব নরেশ ওঝার হস্তক্ষেপে খেলা পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয় সৌরভ গাঙ্গুলিকে। সৌরভ ইডেনে এসে দুই দলের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি আম্পায়ারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। একজন খেলোয়াড়ের আউটকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আগে কোনওদিন ইডেন দেখেনি। শুধু তাই নয়, পাঁচ ঘণ্টা খলা বন্ধ থাকল। তারপরে আবার খেলা শুরু হল, এই অবাক কাণ্ড প্রত্যক্ষ করা যায়নি লিগ ক্রিকেটের ইতিহাসে। মাঠে আবার দেখা গিয়েছে এক ঘণ্টায় তিন ওভার বল হওয়ার ঘটনা। মাঝেমধ্যেই খেলোয়াড়রা শুয়ে বা বসে পড়ে সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতি দেখতে পাওয়া গেল। এই গণ্ডগোল থামাতে গিয়ে সিএবি’র কর্মকর্তারা হিমশিম খেয়ে যান। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয়, পুলিশ ডাকতে হয়।
পাঁচদিনের এই ম্যাচে দ্বিতীয় দিন থেকে অশান্তি তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের শেষ দিনে বিতর্ক তৈরি হল হাতাহাতিতে। ভবানীপুর ক্লাব ৬ উইকেটে ৬৪৩ রান করে দান ছেড়ে দেয়। তার জবাবে ইস্টবেঙ্গল ৮ উইকেটে ২৪৩ রান করে। তারপরে বিকেলের দিকে বৃষ্টি নামে। গোলাপি বলে নৈশালোকের ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ভবানীপুর ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে ম্যাচ বন্ধ করার কারণ কী? খেলার ইচ্ছা থাকলেই করা যায়। ইস্টবেঙ্গলের আরও দুই উইকেট ভেঙে দিতে পারলেই ভবানীপুর লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। সেই কারণেই এই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ায় ভবানীপুরের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তারই মধ্যে ম্যাচ বন্ধ হতেই ইস্টবেঙ্গলের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় ও কণিষ্ক শেঠ মাঠ ছেড়ে যখন যাচ্ছিলেন, তখন সাকিবের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সেই ঝামেলা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে। দেখা যায় ড্রেসিং রুমের বাইরে দুই ক্লাবের কর্মকর্তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই সিএবি’র টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নীতীশরঞ্জন দত্ত সহ অন্যরা এগিয়ে এসে দুই শিবিরের কর্মকর্তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। গোটা ঘটনায় সিএবি’র কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা উঠে এসেছে। এই খেলাকে ঘিরে ইডেন উদ্যানে যে প্রহসন চলছে তা ভাবা যায় না। এক কথায় বলা যায়, এই ঘটনা বাংলা ক্রিকেটে একটা কলঙ্ক।