আন্তর্জাতিক ফুটবলে বর্ণময় -বিতর্কিত এক চরিত্র ছিলেন দিয়াগো আর্মান্দো মারাদোনা। ফুটবল ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ সহ একাধিক সাফল্য পেলেও কোনও সময়েই বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। ছিয়াশির মেক্সিকো বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে মারাদোনার ‘হ্যান্ড অফ গড’ সেই বিতর্কগুলির মধ্যে অন্যতম। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিল্টনের সামনে দাঁড়িয়ে সেদিন রেফারির অজান্তে ডানহাত দিয়ে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে এগিয়ে দিয়েছিলেন মারাদোনা। পরবর্তীকালে সেই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। যদিও, বিষয়টি নিয়ে মজার ছলে মারাদোনা এর নামকরণ করেন ‘হ্যান্ড অফ গড।’
দীর্ঘ একদশক বাদে আবারও সেই ঘটনার সাক্ষী রইল ফুটবল বিশ্ব। মারাদোনার মৃত্যুর পাঁচ বছরের মাথায় আবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন মারাদোনাকে আদর্শ হিসেবে মানা ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার জুনিয়র। তবে, এবার আর রেফারির নজর এড়ালো না সেই ঘটনা। ফলে নিজের বিদায়ী ম্যাচে লালকার্ড দেখেই মাঠ ছাড়তে হল তাঁকে। ঘটনাটি ঘটে স্যান্টোস বনাম বোতাফোগোর ম্যাচে। এটিই ছিল স্যান্টোসের জার্সিতে নেইমারের শেষ ম্যাচ। ম্যাচের প্রথমার্ধে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। এমনকি, দ্বিতীয়ার্ধে চেষ্টা করেও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না কোনো দল। তার মাঝেই বিপক্ষ খেলোয়াড়কে জঘন্য ফাউল করায় প্রথমবারের জন্য হলুদ কার্ড দেখেন নেইমার। এরপর, ম্যাচের একেবারে শেষলগ্নে বোতাফোগোর বক্সে আসা ফিরতি বলে নেইমার হঠাৎই হাত দিয়ে গোল করে বসেন। যা নজর এড়ায়নি রেফারির। এরফলে, তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য হলুদ কার্ড দেখান ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে। পরপর দুটি হলুদ কার্ড দেখায় লাল কার্ড দেখে ম্যাচ ছাড়তে হয় তাকে। এরপরেই ম্যাচ শেষের মিনিট চারেক আগে গোল করে জিতে বোতাফোগো। এই ম্যাচে হারের ফলে লিগ টেবিলের ১৮ নম্বরে রইলো নেইমারের ক্লাব।
যদিও ম্যাচ শেষে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেইমার বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। ক্ষমা চাইছি। আমি যদি লাল কার্ড না দেখতাম, তাহলে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তাম। আমার জন্যই তিন পয়েন্ট পায়নি দল।’ এ প্রসঙ্গে বলা যায়, সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল থেকে চলতি মরসুমে নিজের ছেলেবেলার ক্লাব স্যান্টোসে ফিরেছিলেন তিনি। তবে, স্যান্টোসের হয়ে অভিজ্ঞতাটা খুব একটা সুখের হলো না তার। এই মরসুমে স্যান্টোসের শেষ ম্যাচ ফোর্টালিজার বিরুদ্ধে। কিন্তু, এই ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ফোর্টালিজার বিপক্ষে আর নামতে পারবেন না তিনি। ফলে, তার সাথে যদি নতুন করে চুক্তি না বাড়ায় স্যান্টোস, তাহলে বোতাফোগোর বিরুদ্ধে স্যান্টোসের জার্সিতে শেষ ম্যাচটি খেলে ফেললেন নেইমার।