• facebook
  • twitter
Sunday, 10 August, 2025

ছন্দে ফিরতেই সবুজ-মেরুন ব্রিগেড জয়ের মুখ দেখল

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস খেলায় ফিরতেই ৪-০ গোলে জয় তুলে নিল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে।

ছন্দে ফিরল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। প্রথম ম্যাচে কলকাতা ফুটবল লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড মুখোমুখি হয়েছিল পুলিশ এসি’র বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচে তাদের হারতে হয়েছিল পুলিশের কাছে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তারা গোল পরিশোধ করতে পারেনি। সেদিনের ম্যাচে নৈহাটিতে সমর্থকরা যাঁরা হাজির হয়েছিলেন, সেদিন তাঁদের হতাশার মুখটাই বড় করে দেখা দিয়েছিল। এমনকি গত বছর এই পুলিশের কাছই হারতে হয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসকে। এমনকি খেলার শেষে সমর্থকরা কোচের বিরুদ্ধে স্লোগানও তুলেছিলেন। আবার জার্সি ছেঁড়া নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে। এবং ওই অশান্ত পরিবেশকে সরিয়ে দিতে পুলিশকে লাঠি উঁচিয়ে দৌড়তে হয় সমর্থকদের উদ্দেশে। তবে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস খেলায় ফিরতেই ৪-০ গোলে জয় তুলে নিল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে। দ্বিতীয় ম্যাচে কোচ ডেগি কার্ডোজো প্রমাণ করে দিলেন, দল ছন্দে ফিরতেই দুরন্ত ভূমিকা নিতে পারে।

এদিন শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে খেলতে থাকে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। প্রথম ম্যাচে যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল, তা এদিন দেখতে পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ আক্রমণের গতি ছিল। দুরন্ত ভূমিকা পালন করে প্রতিপক্ষ দলকে প্রায় কোণঠাসা করে রেখে দিয়েছিল। তবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস দলে বেশ কয়েকজন নতুন মুখকে দেখা গিয়েছে। খেলার প্রথম মিনিট থেকেই সালাউদ্দিন, পাসান তামাং, টংসিন, সন্দীপ মালিকরা আক্রমণে ঝড় তুল চেষ্টা করেন। দলের অধিনায়ক সন্দীপ যেভাবে পুরো দলটাকে পরিচালিত করেছেন, তা অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। খেলার প্রথম গোলটি করেন সন্দীপ। খেলার ২১ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে সন্দীপ একক কৃতিত্বে গোলটি করেন। ২৯ মিনিটের মাথায় কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের গোলরক্ষক রুমিত যাদবের ভুলে আত্মঘাতী গোল হয়ে যায়। বিরতির আগে মোহনবাগান ২-০ গোলে এগিয়ে থাকে।

দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকেই আবার আক্রমণে গতি বাড়িয়ে সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা প্রতিপক্ষ দলের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। ৪৯ মিনিটের মাথায় একটি দুর্দান্ত সাইড ভলিতে পাসান তামাং গোল করে সবুজ-মেরুন শিবিরকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে দেন। স্বাভাবিকভাবেই ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকা মোহনবাগানের ফুটবলাররা একটু হালকা চালে খেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোচের নির্দেশে আবার আক্রমণে খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রকাশ করতে থাকেন। খেলার ৭২ মিনিটের মাথায় দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন আবদুল্লা। এককথায় বলা যায় প্রতিপক্ষ কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন কোনও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। বরঞ্চ ভুল খেলা খেলে নিজেদের বিপদ ডেকে আনে। ম্যাচের একেবারে শেষ পর্বে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়।

খেলার শেষে কোচ ডেগি কার্ডোজ বলেছেন, প্রথম ম্যাচে অংশ নেওয়ার আগে মাত্র সাতটা দিন সময় পাওয়া গিয়েছিল। যার ফলে খেলোয়াড়দের মধ্যে সেই সমন্বয় ধরা পড়েনি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ফুটবলাররা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শুধু আক্রমণ গড়ে তুলেছে, তাই নয়, গোলের মুখ কীভাবে খুলতে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন। চেনা ছন্দে ফিরতেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস আবার জয়ের হাসি হাসতে পেরেছে। আশা করা যায়, আগামী দিনে যত খেলা গড়াবে, ততই ফুটবলাররা আরও ভালো ফুটবল খেলবেন। কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কোচ হলেন সাবির আলি। কিন্তু সেইভাবে দলকে এখনও সাজিয়ে উঠতে পারেননি। ক্লাবের সচিব স্বপন ব্যানার্জি জানিয়েছেন, ভিনরাজ্যের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ঘরের ছেলেরা সেইভাবে সমন্বয় গড়ে তুলতে পারেননি বলে পরপর দুটো ম্যাচে হারতে হল। আশা করা যায় পরবর্তী ম্যাচগুলিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকবে।