একটা ম্যাচে যেমন নায়ক থাকেন, তেমনই থাকেন ট্র্যাজিক নায়ক। প্রত্যেকেই চান নায়ক হতে। রিয়ান পরাগের ক্ষেত্রেও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। অধিনায়ক হিসেবে এই মরশুমে ভালো করতে পারেননি, তাঁর দলও ধুঁকেছে। সেই পরিস্থিতিতে কিছু না হারানোর ম্যাচে জ্বলে উঠলেন রিয়ান। কেকেআর-এর বিরুদ্ধে ৯৫ রান করলেন। তাঁর দল শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করলেও জয় এল না। ১ রানে হারল রাজস্থান। আর ম্যাচ শেষে ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে রইলেন রিয়ান।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এই ম্যাচটা কেকেআর-এর কাছে ছিল ডু অর ডাই। আর সেটাই দেখান ব্যাটসম্যানরা। টিম গেম বলতে যেটা বোঝায় সেটা দেখা গেল কেকেআর-এর ব্যাটিংয়ে। ওপেনে রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৩৫ ও সুনীল নারিন করেন ১১। মাত্র ১৩ রান ওপেনিং জুটি ফিরলেও সেটা কেকেআর-এর বড় রান তুলতে খুব একটা সমস্যা হয়নি।
রাহানে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২৪ বলে করলেন ৩০ রান। এর পর অঙ্গকৃষ রঘুবংশী ৩১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছেন। এর পর আশা করা হয়েছিল বেঙ্কটেশ নামবেন। কিন্তু তাঁকে বসিয়ে ব্যাটে নামেন আন্দ্রে রাসেল। তাঁকে উপরে নামার প্রতিদান দেন তিনি। রাসেল ২৫ বলে ৫৭ রান করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন রিঙ্কু সিং, করেন ৬ বলে ১৯। এই দুই তারকা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। রাজস্থানের হয়ে একটি করে উইকেট নেন জোফ্রা আর্চার, যুধবীর সিং, মহেশ ঠিকশানা, রিয়ান পরাগ।
কেকেআর-এর রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান ভালো শুরু পায়নি। ওপেনিং জুটি করে মাত্র ৫ রান। বিষ্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশী ৪ রানে ফেরে। সেঞ্চুরির পর এই নিয়ে পরপর দুটো ম্যাচে রান পেলেন না। বৈভব ফেরার পর কুণাল সিং রাঠোর, ধ্রুব জুরেল, ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা খাতা না খুলে ফেরেন। ধ্রুব জুরেল ও হাসারঙ্গাকে এক ওভারে একই কায়দায় ফেরান বরুণ চক্রবর্তী।
এই দুই তারকা ফেরার পর রাজস্থান ৭১ রানে ৫ উইকেট হয়ে যায়। তখন মনে হয়েছিল ম্যাচটা কেকেআর-এর দিকে। সেই সময় হাল ধরেন রিয়ান পরাগ। অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন তিনি। মইন আলির মতো অভিজ্ঞ বোলারকে এক ওভারে পাঁচটা ছক্কা মারেন। এর পরের ওভারে তিনি বরুণকে ছক্কা মারেন। এক ম্যাচে পরপর ছটা ছক্কা মারেন তিনি।
তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন শিমরন হেটমায়ার। এই জুটি ৪৮ বলে করে ৯২। ২৩ বলে ২৯ রান করে হেটমায়ারকে ফেরান হর্ষিত রানা। এর পর রিয়ানের থেকে সেঞ্চুরি আশা করা হচ্ছিল। তিনি সেই সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ১৭.৪ ওভারে হর্ষিত রানার বলে ৯৫ রান করে আউট হন। রিয়ান ফেরার পরেই কোমর ভাঙে রাজস্থানের।
রিয়ানের পর শুভম দুবে ও জোফ্রা আর্চার লড়ার চেষ্টা করলেও সেটা কার্যকর হয়নি। ম্যাচ ফিনিশ করতে পারেনি কেউ। শেষ ওভারে রাজস্থানের জয়ের জন্য বাকি ছিল ২২ রান। এল ২০ রান। ১ রানে ম্যাচ জিতল কেকেআর।
এই ম্যাচে কেকেআর-এর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মইন আলি, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী। একটি উইকেট নেন বৈভব আরোরা।