প্রশ্ন: এশিয়ান কাপের প্রস্ততিতে ফ্রেন্ডলি ম্যাচের রণকৌশল কি থাকছে?
নৌশাদ মুসা: আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও লোকাল ম্যাচের পার্থক্য আছে। আমার দর্শনে নর্থইষ্ট ইউনাইটেড রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভল্পমেন্ট লিগে যে আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলেছে,সেই ফুটবল তাজিকিস্হানের বিরুদ্ধে সম্ভব নয়। আমরা ১৫দিনের শিবিরের মাঝে দুটো প্রস্ততি ম্যাচ কলকাতায় খেলেছি।আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলে আমরা ৫-০ ও ৭-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছি। কিন্ত এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে আমরা কঠিন গ্রুপে পড়েছি।সেখানে কাতার,বাহারিনের মতন ম্যাচ খেলার আগে তাজিকিস্হান ও কিঘিজিস্হানের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে আমাদের শক্তি ও ঘাটতি বুঝে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। জুলাই ও আগষ্ট মাসের প্রস্ততি শিবিরের আগে এই ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দুটো তাই খুবই গুরুত্বপূর্ন।
প্রশ্ন: এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব ছাড়া ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসেও ভারতের এই দল অংশগ্রহন করবে।দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা নিয়ে এআইএফএফের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে?
নৌশাদ মুসা: আন্তজার্তিক স্তরে ভালো ফল করতে প্রস্ততি শিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।সেপ্টেম্বর মাসের এশিয়ান কাপের খেলার আগে জুলাই ও আগষ্ট মাসের শিবিরে কোন কোন খেলোয়াড় পাওয়া যাবে,তা বেশ গুরুত্বপূর্ন। সামনেই ডুরান্ড কাপ আছে।আইএসএল ও আইলিগের দলগুলো অফ সিজিনের প্রস্ততিতে নেমে পড়বে। এই অনূর্ধ্ব-২৩ ছেলেরা নিজেদের ক্লাবে ফিরে যাবে। তাদের ক্লাবের সিডিউলে তারা যুক্ত হয়ে পড়বে। ফলে শিবিরের ফুটবলার যোগদান করানোর কঠিন কাজ এআইএফএফকে সামলাতে হবে। এটা খুব চ্যালেঞ্জিং বিষয় বলা যায়।
প্রশ্ন: ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসের প্রস্ততিতে এশিয়ান কাপ অ্যাসিড টেস্ট বলা যায়।এশিয়ান কাপের জন্য দল কতটা তৈরি আছে?
নৌশাদ মুসা: এশিয়ান কাপে দল কতটা তৈরি এখনই বলা যাবেনা। ফ্রেন্ডলি ম্যাচের আগে টিমটা সম্পর্কে কিছুটা আইডিয়া হয়েছে। ফ্রেন্ডলি ম্যাচের আইডিয়া ও আগের আইডিয়া মিলিয়ে প্রয়োজনে নতুন খেলোয়াড় দলে যুক্ত করা হতে পারে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। বর্তমান টিমটা খুবই ভালো। একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে অনেকটাই পথ এগোলে কিছু মন্তব্য করা যেতে পারে।
প্রশ্ন: বিগত ৬বছরে প্রায় ৫০জন অনূর্ধ্ব ২৩ ফুটবলাররা এশিয়ান কাপে খেলেছে। যাদের অধিকাংশ ফুটবলার পরবর্তী সময়ে আইএসএলে বিভিন্ন বিদেশি কোচের প্রশিক্ষণে খেলছে। দীর্ঘদিন আইএসএলের সঙ্গে যুক্ত থেকে ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে?
নৌশাদ মুসা: নিশ্চয়ই আশাবাদী হওয়া যায়।তবে যতটা উন্নতি হওয়ার কথা ছিল,তা হয়নি। অধিকাংশ জুনিয়র ফুটবলার তাদের ম্যাচ টাইমের দিকে নজর না দিয়ে বেশি টাকা রোজগারের পথ বেছে নিয়ে নিজেদেরই ক্ষতি করে ফেলেছে। বর্তমান টিমের ৫০% ফুটবলার যথেষ্ট ম্যাচ টাইম না পেয়ে বেঞ্চে সময় কাটিয়েছে। এদের সম্পর্কে নানাভাবে ভাবতে হচ্ছে।এদের আন্তজার্তিক ম্যাচের উপযোগী করে তুলতে হবে। সবাই একত্রিত হয়ে আগামী জুলাই ও আগষ্ট মাসের শিবিরের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
প্রশ্ন: জুনিয়র ফুটবলার তৈরির ক্ষেত্রে আইএসএলের টিমগুলো নিজেদের প্রতিশ্রুতি কি রাখছে?
নৌশাদ মুসা: জুনিয়র ফুটবলারদের নিয়ে প্রতিটি ক্লাবের আলাদা আলাদা কর্মপদ্ধতি আছে। স্থানীয় লিগ ও বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহন করলে বছরে ৪০টা ম্যাচ জুনিয়ররা খেলতে পারে।আমাদের নর্থইষ্ট ইউনাইটেড গৌহাটি প্রিমিয়ার লিগ,গভর্নরস গোল্ডকাপ,লাদাখ ও শিলচরের টুর্নামেন্ট খেলেছে। এছাড়া আরএফডিএলের প্রায় ১৫/২০টা ম্যাচ আছে। এই ৪০টা ম্যাচেই আমরা অধিকাংশ অনূর্ধ্ব ১৮ ছেলেদের খেলিয়েছি। সিনিয়র টিমের কোচ ও জুনিয়র টিমের কোচের প্রতিদিনকার যোগাযোগের মাধ্যমেই জুনিয়র ফুটবলারদের উন্নতি করা সম্ভব।বেঙ্গালুরু এফসিতেও আমাদের এই প্রক্রিয়াতে কাজ হতো।
প্রশ্ন: লোকাল লিগে ভূমিপুত্র খেলানোর দাবি হচ্ছে।অপরদিকে ক্লাবগুলোতে এজেন্ট রাজ। জুনিয়র ফুটবলারদের এক্ষেত্রে আপনার কি পরামর্শ থাকবে।
নৌশাদ মুসা: বেঙ্গালুরুএফসি তে থাকার সময় কর্নাটক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের এমন নীতি দেখেছি। বাংলাতে এই নীতি মানা হচ্ছে। কিন্ত স্থানীয় ফুটবলারদের অনেক বেশি কম্পিটিশন ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। ক্লাবগুলোকে জুনিয়র ফুটবলারদের সবরকম সুযোগসুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্পন্য করলে চলবে না।আর,জুনিয়র ফুটবলারদের শৃঙ্খলা মেনে কঠোর অনুশীলন করতে হবে। নিজেদের খেলার সুযোগ কোন ক্লাবে গেলে বেশি পাওয়া যাবে,তা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।এজেন্টদের কথা শুনে টাকার পিছনে ছুটলে হবেনা।