সুপার কাপের শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে চেন্নাইয়ান এফসি’র বিরুদ্ধে জয় ছাড়া কোনও উপায় ছিল না ইস্টবেঙ্গলের। কার্যত নক-আউট সেই ম্যাচে দুরন্ত জয় তুলে নিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। মঙ্গলবার বাম্বোলিমের জিএমসি স্টেডিয়ামে আইএসএলের দল চেন্নাইয়ান এফসির বিরুদ্ধে ৪-০ গোলে জিতলো তারা। এই ম্যাচে প্রথম একাদশে বেশকিছু বদল এনেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজো। গত ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদারের বদলে এদিন শুরু থেকে একনম্বর গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলকে খেলানো হয়। পাশাপাশি, ডেম্পো ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে নামা মিগুয়েলকেও এই ম্যাচে প্রথম একাদশে রেখেছিলেন তিনি। খেলা শুরুর প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। তবে, সেই যাত্রায় চেন্নাইয়ানকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক মহম্মদ নওয়াজ। তারপরেও আক্রমণের চাপ এতটুকু কমেনি লাল-হলুদ ব্রিগেডের। কিন্তু পরপর আক্রমণে বিপক্ষের চাপ সৃষ্টি করলেও প্রয়োজনীয় গোল কিছুতেই আসছিল না। উল্টে খেলার গতির বিপরীতে প্রায় গোলমুখ খুলে ফেলেছিলেন চেন্নাইয়ান এফসির ফারুখ চৌধুরী।
এই সময়, যেভাবে দলের হয়ে নিশ্চিন্ত পতন বাঁচালেন প্রভসুখন গিল, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এরপরেই দুই উইং দিয়ে আক্রমণের গতি বাড়ায় অস্কার ব্রুজোর দল। তাঁদের আক্রমণে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছিল চেন্নাইয়ান এফসির রক্ষণ। সেই সুযোগ নিয়ে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার কেভিন সিবিলে। বক্সের বাইরে বিপিন সিংকে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পায় ইস্টবেঙ্গল। মহেশ সিংয়ের নেওয়া সেই ফ্রি-কিক থেকে হেডে বল গোলের জালে জড়াতে ভুল করেননি ইতালিয়ান এই ডিফেন্ডার। খেলার ৩৯ মিনিটে সেই মহেশের পাস থেকে গোলটি করে যান বিপিন সিং। এর ৬ মিনিটের মধ্যেই ফের ম্যাজিকের মতো বিপিন যেভাবে গোল করলেন, তা দর্শকদের মনে অনেকদিন লেখা থাকবে। প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে চেন্নাই বক্সের বাইরে বল পান লাল-হলুদ স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদ। শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পারলেও তাঁর আলতো টাচে বল যায় গোলের সামনে অরক্ষিত অবস্থায় থাকা বিপিন সিংয়ের কাছে। বিপিন গোল করতে ভুল করেননি। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলপ ৩-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই সাজঘরে ফেরে।
Advertisement
এরপর, দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও নিজেদের দাপট বজায় রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই সময়, গোলের বেশকিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করেন লাল-হলুদ খেলোয়াড়রা। খেলার এই পর্বে জাপানি স্ট্রাইকার হিরোশির শট পোস্টে প্রতিহত হয়। এরপর খেলার একেবারে শেষলগ্নে বক্সের মধ্যে এডমুন্ডকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধের সংযুক্তি সময়ে (৯০+৪) মিনিটে সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি জাপানি স্ট্রাইকার হিরোশি। অন্যদিকে, দ্বিতীয়ার্ধে গোলের কিছু সুযোগ পেলেও, গোল করতে ব্যর্থ হয় চেন্নাইয়ান এফসি। শেষপর্যন্ত ৪-০ গোলে জিতেই মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ জিতলেও অস্কারের চিন্তা এখন পরের ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। শিল্ডের ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে হেরে যাওয়ায় মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ সামনে চলে এল। এই ম্যাচে জয়ের ফলে আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গল জোরদার লড়াই করবে বলে সমর্থকরা মনে করছেন।
Advertisement
Advertisement



